বাংলাদেশের জামায়েত উল মুজাহিদিনের নেতারা এখন ভারতে জামায়েত উল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া(জেএমআই) নামে সংগঠন গড়ে তুলেছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়া জেএমবি জঙ্গিদের জেরা করে পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে। জেএমবি নেতা শাইখ সালেহুদ্দিনের নেতৃত্বে এই সংগঠনটি তৈরি হযেছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি সাহম আল হিন্দ মিডিয়ার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সালেহুদ্দিন বলেচেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে এখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছি। ভারত জামায়েত উল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া তার উদাহরন। অন্যান্য জায়গাতেও সংগঠন তৈরির কাজ চলছে। এই সালেহুদ্দিনের অন্যতম সহযোগী হল কাওসর ওরফে ‘বোমারু’ মিজান। এই দুজনই ২০১৪ সালের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ।
দুজনের বিরুদ্ধে ভারতের জাতীয গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ ৫ লক্ষ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশেও এরা অভিযুক্ত। এদের মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। তবে ২০১৪ সালে ফেব্রুয়ারিতে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে এই দুজনকে ছিনিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা। এরপরেই এরা পালিয়ে ভারতে চলে এসেছিল। সালেহুদ্দিন ডেরা তৈরি করেছিল বীরভুমের কীর্ণাহারে। আর মিজান মুর্শিদাবাদে। মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং ও মালদহ থেকে ধৃত জেএমবি জঙ্গিদের জেরা করে জানা গেছে, সালেহুদ্দিন মাস সাতেক আগে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়নে এসে উঠেছেন। এরপরেই বেশ কয়েকটি মডিউল তৈরি হয়েছে সেখানে। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পরেই পশ্চিমবঙ্গে জেএমবির কার্যকলাপের বিষয়টি জানা যায়। তবে জেএমবির সাবেক নেতারা নব্য জেএমবিতে যোগ দিলেও এরা এখন নতুন সংগঠনের নামেই সংগঠিত হওয়ার কাজ চালাচ্ছে। সালেহুদ্দিন জানিয়েছেন, তারা আর কায়দার প্রতিই বিশ্ব^স্ত। গত ১৯শে জানুয়ারি বিহারের বুদ্ধগয়ায় তিব্বতের ধর্মগুরুর দালাই লামার সফরের সময় সেখানে এই সংগঠনই বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। সে কথা স্বীকারও করেছে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার জঙ্গিরা। এদিকে কলকাতার একটি দৈনিকে বলা হযেছে, গত বছরের আগস্ট মাসে জেএমবির শীর্ষ নেতা সালাউদ্দিনের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে কাওসারের এক বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভারতে কাজ চালানোর জন্য জেএমবির নাম পাল্টে জেএমআই করার। ওই সভায় জেএমআইয়ের প্রধান করা হয় ‘বোমারু’ মিজানকে। তাকে শীর্ষে রেখে জেএমআইয়ের ২২ সদস্যের একটি কোর কমিটিও গঠন করা হয়। এই ২২ জনকে তিন ভাগ করে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পাঠানো হয় ভারতের চেন্নাইতে। পশ্চিমবঙ্গে জেএমবির ওপর পুলিশের নজরদারি অব্যাহত থাকায় নিরাপদ জায়গা হিসেবে তারা বেছে নেয় চেন্নাইকে। আর চেন্নাই থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা যুবকদের অপারেশনের জন্য প্রথম পাঠানো হয়েছিল বুদ্ধগয়ায়। ঝাড়খন্ডেও এই সংগঠনের একটি মডিউল রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।