× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জাবি ভিসির মেয়াদ বাড়লো ৪ বছর

বাংলারজমিন

রাহুল এম ইউসুফ, জাবি থেকে
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার

দেশের প্রথম নারী ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর নারীদের যোগ্যতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে আত্মনিয়োগ করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে। শান্ত রেখেছি ক্যাম্পাসকে। সকলের সহযোগিতায় ৪ বছরের মেয়াদ প্রায় শেষ করতে পেরেছি। এই গুরু ও দীর্ঘ দায়িত্ব পালনে কখনো অবহেলা করিনি। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন সিদ্ধান্তও কখনো গৃহীত হয়নি আমার সময়ে। প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সময়ে উল্লেখযোগ্য কোনো অরাজকতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। এ ছাড়া ক্যাম্পাস থেকে রক্তপাত ও অস্ত্রের ঝনঝনানি সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করেছে বলে গর্ববোধ করেন দেশের একমাত্র নারী ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম।
মানবজমিনকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকালে জাবি ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম এসব কথা বলেন।  ২০১৪ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি ভিসি প্যানেল নির্বাচনে প্রথম হয়ে চ্যান্সেলরের নির্দেশে একই বছর ২রা মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী ভিসি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। চলতি বছরের ২রা মার্চ শান্তিপূর্ণভাবে মেয়াদ পূর্ণ করতে চলেছেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ বছরের ইতিহাসে বেশির ভাগ ভিসিই তাদের পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। বিভিন্ন সময় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। তবে দেশের এ নারী ভিসির ক্যাম্পাস পরিচালনায় স্বচ্ছ ও যোগ্যতার পরিচয় দেয়ায় আগামী চার বছরের জন্য আবারো তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।  আর এ খবরে ফারজানা ইসলামকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন। এ বিষয়ে অধ্যাপক ফারজানা বলেন, আমার মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় তুলনামূলক স্থিতিশীল রেখেছি। ছাত্র-শিক্ষক সকলের স্বার্থকে আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছি ও যৌক্তিক সমাধান করেছি। নীরবে আমার বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছি। আর এই নীরবে কাজ করার মধ্য দিয়েই আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছেছি। তাই প্রথম নারী ভিসি হিসেবে কখনো আলোচনায় আসতে চাইনি। নারীদের যোগ্যতা নিয়ে যেন কোনো বিরূপ প্রশ্ন না ওঠে সে জন্যই আমি নীরব থেকেছি, অর্জন করেছি সোনালী ইতিহাস। দেখিয়েছি নারীদের উজ্জ্বল মহিমা। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। দায়িত্ব নিয়েই শিক্ষার্থীদের পরম চাওয়া সমাবর্তনের মতো বড় কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলাম এবং সার্থক হয়েছি।
অনুষ্ঠিত করেছি ১৯ বছর থেমে থাকা রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন। ইতিমধ্যে জাকসু নির্বাচনের শোরগোল শুরু করেছি। ফলে প্রথম থেকেই স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি পরিশ্রম করেছি। বাইরে বা মিডিয়াতে সময় দেয়া হয়নি তেমন। যদিও প্রথম নারী ভিসি হিসেবে মিডিয়াতে আমন্ত্রণ পেতাম প্রচুর।’
অধ্যাপক ফারজানা বলেন, ‘আমি আমার মেধা ও শ্রম দিয়ে চেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থিতিশীল রাখতে। কতটুকু সফল হয়েছি, তা শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দেশবাসী বলবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রথম নারী ভিসি হিসেবে পদটির ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে আমার অধিক কাজ করতে হয়েছে। কারণ, আমি জানতাম, আমার ব্যর্থতার দায়ভার দেশের নারী সমাজের ওপর চাপানো হবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা, গবেষণার গুণগত মান ও সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মাত্রই মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। এর পেছনে কঠিন পরিশ্রম করাসহ অনেক চাপ নিয়েছি যা আমার জন্য ছিল মহাচ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি মহাসমারোহে ও সার্থকভাবে ২টি আন্তর্জাতিক সেমিনার উপহার দিয়েছি। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উজ্জ্বলভাবে সমাধিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি হয় তাদের মধ্যে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ক্যাম্পাসকে স্থিতিশীল রেখে একটু পড়ালেখার সুযোগ দিলেই তারা যেকোনো অবস্থানে গিয়ে দেশ ও জাতিকে অনেক বড় অর্জন উপহার দিতে পারবে। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মহল অসৎ স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে অনৈতিক ফায়দা অর্জনের জন্য বিভিন্ন মহলের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালায়। ছোট বিষয়গুলো নিয়ে তারা ‘তিলকে তাল’ বানানোর চেষ্টায় ব্যস্ত থাকে।’
অধ্যাপক ফারজানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের পাশাপাশি নারীর মর্যাদা রক্ষায় আমি আগেও বদ্ধপরিকর ছিলাম এবং জীবনভর এ সংগ্রাম করতে সদা প্রস্তুত রয়েছি।’ আর আমাকে যদি মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবারো দায়িত্ব দেন তবে আমি ক্যাম্পাসকে র‌্যাগিং, সিট সংকট, সেশনজটসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সকল সংকট কাটিয়ে অতিক্রম করতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো।’ এজন্য তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দেশবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর