দেশে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রোববার দুপুরে চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে সম্মিলিত জাতীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এইচ এম এরশাদ এ কথা জানান। এরশাদ বলেন, দেশে আগাম নির্বাচন হতে পারে বলে কথা ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। তার জন্য প্রস্তুত আছি। যখনই নির্বাচন হোক জাতীয় পার্টি অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, এখন রাজনীতিতে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। আমরা কিন্তু অস্থির নই। আমরা ভালো আছি।
আমাদের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। জীবনে সুযোগ বারবার আসেনা, আল্লাহ এবার সুযোগ দিয়েছেন, এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আগামী ২৪শে মার্চের মহাসমাবেশ সফল করার অনুরোধ জানিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ বলেন, এই সমাবেশে লক্ষ লোক আনতে হবে। দেখিয়ে দিতে হবে জাতীয় পার্টি অনেক শক্তিশালী। জাতীয় পার্টি ক্ষমতা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। বৈঠক শেষে জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে। দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে এককভাবে ৩০০’শ আসনে প্রার্থী দেবে। প্রার্থী যাচাই-বাচাই অনেক দূর এগিয়েছে। তৃণমুল থেকেও মতামত নেয়া হবে। আগামীতে বোর্ড বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোটের রাজনীতির সংস্কৃতিতেও মাথায় রাখা হচ্ছে বলে জানান জাপা মহাসচিব। জাতীয় পার্টি একই সঙ্গে বিরোধীদল দাবি করলেও মন্ত্রিসভাতেও রয়েছে। বিষয়টি সাংঘর্ষিক কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে জাপা মহাসচিব বলেন, দেশের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, কখনও কখনও সরকারে থাকাটা বাঞ্ছনীয় হয়ে উঠে। আমরা সংসদে কি রোল প্লে করছি সেটাও দেখার বিষয়। বিএনপি’র নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে নানান রকম গুঞ্জন চলছে। এ বিষয়ে মহাসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, যতদিন তারা ঘোষণা দেয়নি, ততোদিন তারা আসছে এটাই ধরেই নিই। অপর প্রশ্নের জবাবে বলেন, সবদল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এটাই কাম্য। নির্বাচনে জিতলে সুষ্ঠু হয়েছে, আর হারলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। ১৯৯০ সালের ঘটনার কথা উল্লেখ করে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, তখন আমাদের পার্টির চেয়ারম্যানকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছিলো। আমাদের সঠিকভাবে নির্বাচন করতে দেয়া হয়নি। তবুও আমরা কোন হঠকারি সিদ্ধান্ত না নিয়ে নির্বাচনে ছিলাম। সম্মিলিত জাতীয় জোটের বৈঠকে আরও অংশ নেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভ রায়, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সউম আব্দুস সামাদ, মাওলানা আনম মাসউদ হোসাইন আল ক্বাদেরী, অর্থ সচিব সৈয়দ মোজাফ্ফর আহমদ, অ্যাডভোকেট ইসলাম উদ্দিন দুলাল, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক, ক্বারী মাওলানা আসাদুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ মুফতি মহিবুল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব মাও: আবুল হাসানাত, বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ) চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি, প্রধান সমন্বয়কারী মো. আখতার হোসেন, এআরএম জাফর বিল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।