× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ত্রিপুরার মানুষ কোন পরিবর্তনের রায় দিলেন তাই নিয়ে প্রবল আলোচনা

ভারত

কলকাতা প্রতিনিধি
(৬ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮, সোমবার, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন

ত্রিপুরার ২৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫৮৯ জন ভোটার রোববার পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তবে কোন পরিবর্তনের পক্ষে তারা রায় দিয়েছেন তা জানা যাবে আগামী ৩রা মার্চ। ওই দিন রায়ের ফল প্রকাশ হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদীর চলো পাল্টাই শ্লোগানে মানুষ সাড়া দিয়েছেন নাকি টানা বাম শাসনের রেকর্ডের পথে চলেছেন মানিক সরকার সেটা নিয়ে ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পর থেকে প্রবল আলোচনায় শুরু হয়েছে। গতকাল বিধানসভার ৬০ আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে মোট ৫৯টি বিধানসভা আসনে। একটি আসনে প্রার্থীর মৃত্যুতে অবশ্য ভোট গ্রহণ স্থগিত রয়েছে। ৩ হাজার ২১৪টি ভোট দান কেন্দ্রে সকাল থেকেই মানুষ লাইন দিয়েছিলেন। দিনের শেষে প্রায় ৭৯ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে।
ব্যাপক ইভিএম বিকল ছাড়া ভোট হয়েছে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে। ভোটের নিরাপত্তার জন্য অবশ্য ৩০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছিল। এদিন রাজ্যে প্রায় ২৫০টি বুথে ইভিএম বিকল হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের মতে, সংখ্যাটা ১৬০-এর কাছাকাছি। উত্তর পূর্ব ভারতের এই ছোট্ট রাজ্যটিতে এবারের নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল বিজেপির নজিরবিহীন প্রচারণায়। বছর দুই ধরে সংগঠন গোছানোর কাজ করেছে বিজেপি। প্রচুর অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি বিজেপির শীর্ষ নেতারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন প্রচারে। বিভিন্ন জনসভায় ত্রিপুরায় প্রচার করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। একটানা ২৫ বছরের বাম জমানাকে পাল্টে সরকার পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ছিল, ‘মানিক থেকে মুক্তি নিন। এ বার হীরা নিতে হবে!’ ইংরেজি অক্ষর ধরে ধরে ‘হীরা’র অর্থ বুঝিয়েছেন তিনি। মোদীর মতে, এইচ মানে হাইওয়ে, আই মানে ইন্টারনেট, আর মানে রেলওয়ে এবং এ মানে এয়ারওয়ে। এবারের নির্বাচনে মূল লড়াই হয়েছে বামফ্রন্ট এবং বিজেপি ও ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (আইপিএফটি) জোটের সঙ্গে। প্রচারের শেষ পর্যায়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী রাজ্যে ঝটিকা সফরে এলেও কংগ্রেস এবারের নির্বাচনে কোনোক্রমে লড়াই চালাচ্ছে। হাজির তৃণমূল কংগ্রেসও। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভারতের সর্বত্র বিজেপির আধিপত্য কায়েম করার স্বপ্ন নিয়েই এবার বিজেপি ত্রিপুরার দখলের স্বপ্ন দেখেছে। কংগ্রেসের গত বারের বিজয়ী ১০ বিধায়কের মধ্যে ৭ জনকে দল ভাঙ্গিয়ে বিজেপিতে নেওয়া হয়েছে এই লক্ষ্য নিয়েই। একইভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট তৈরি করতেও বিজেপি দ্বিধা করেনি। ত্রিপুরায় বাঙালি জনগোষ্ঠীর আধিক্য হলেও ৩২ শতাংশ উপজাতি ভোটকে বিজেপি নিজের দিকে টানতেই সুবিধাবাদী জোট করেছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা। বিজেপির রাজ্য নেতাদের ধারণা, তারা দুই তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হবেন। তবে বামফ্রন্ট দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার সুবাদে প্রতিষ্ঠান বিরোধীতার মুখোমুখি হলেও বাম নেতারা নিশ্চিত তাদের হারানো সহজ হবে না। সিপিআইএম দলের নিজস্ব হিসাব বলছে, কিছু ভোট (গত বার ৫২%) ও আসন (এখন ৫১) কমলেও সরকার লালই থাকবে। সৎ এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ হিসেবে পরিচিত মানিক সরকার রাজ্যের উন্নয়নেই শুধু সফল হয়েছেন তাই নয়, একই সঙ্গে রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। আর তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেস লড়াইয়ে সামিল হলেও তাদেরও মনের ইচ্ছে বামফ্রন্টই ক্ষমতায় থাকুক। তবে এরপরেও ত্রিপুরার লালদুর্গে বিজেপির মত সাম্প্রদায়িক দলের অধিষ্ঠান যদি সম্ভব হয় তাহলে তার প্রভাব গিয়ে পড়বে বাঙালি অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গেও। আর পশ্চিমবঙ্গের পর ত্রিপুরায় বামফ্রন্টের পরাজয় ভারতে বামশক্তিতে ঠেলে দেবে কয়েক যোজন পিছনে।

[এফএম]
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর