× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খুলনা বিভাগীয় মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নানা সংকটে

বাংলারজমিন

বাগেরহাট প্রতিনিধি
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার

বাগেরহাটে খুলনা বিভাগের একমাত্র মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নানা সংকটে। পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ জনপদের নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ২০০০ সালে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দৈবঞ্জহাটী ইউনিয়নের তুলাতলা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা বিভাগীয় মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। সম্পূর্ণ আবাসিক এ প্রতিষ্ঠানটির ২১টি পদের মধ্যে ১৪টি পদ শূন্য রয়েছে গত ১৪ বছর ধরে। ১৪টি পদের মধ্যে প্রশিক্ষক, হোস্টেল সুপার, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদও রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সকল প্রক্রিয়া শেষে ২০০৫ সালে কৃষি, পশু পালন, পল্টি ও মৎস্য চাষ এ ৪টি ট্রেড নিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সালের জুলাই মাসে সরকার প্রতিষ্ঠানটির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ৫ বছর বন্ধ থাকার পর বর্তমান সরকারের আমলে ২০১০ সালে জুলাইয়ে মৌ চাষ বিষয়ে সাতক্ষিরার ২০ জন উপজাতি নিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। নতুন করে ২০১১ সাল থেকে কম্পিউটার, বিউটিফিকেশন, ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলরিং প্রশিক্ষণ শুরু হয়।
প্রতি বছর ৪টি ব্যাচে এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৬০ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। যা এখনও চলমান। প্রতিষ্ঠানের শুরুতে যে চারটি ট্রেড ও মৌচাষ কোনটিই বর্তমান চালু নাই। এসব ট্রেডের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নেই। যে ৪টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ চালু আছে সেগুলোতেও প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি নেই। হোস্টেলে নিম্নমানের খাবার, ল্যাবে কম্পিউটার, বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। বিদ্যুতের সমস্যায় সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন না প্রশিক্ষণার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার প্রশিক্ষণার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিখতে এসেছি। এখানে এসে বেশ কিছু সমস্যা আছে। ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থী, মাত্র ৬টি কম্পিউটারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এর মধ্যে দু-একটি কম্পিউটার প্রায়ই নষ্ট থাকে। যার কারণে আমরা পর্যাপ্ত ব্যবহারিক করতে পারি না। জোসনা আক্তারসহ একাধিক প্রশিক্ষণার্থীরা বলেন, এখানে যারা আছেন তারা খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের প্রশিক্ষণ দেয়। এখানে নিরাপত্তা জনিত কোনো সমস্যা নেই। তবে হোস্টেলে খুবই নিম্নমানের খাবার খাওয়ানো হয়। হোস্টেলে স্থায়ী কোনো বাবুর্চি নেই। অস্থায়ী ভাবে নিয়োগকৃত বাবুর্চি রান্নার কাজে আমাদের সহযোগিতা করে। যে কারণে প্রশিক্ষণের ক্ষতি হয়। এছাড়াও খাবার পানির জন্য একটি পুকুর আছে, যা শীত মৌসুমে শুকিয়ে যায়। খাবার পনির জন্য বিকল্প ব্যবস্থার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী পরিচালক প্রশিক্ষণ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মোখলেছুর রহমান বলেন, বিভিন্ন জটিলতার কারণে প্রশিক্ষণার্থীদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিতে পারছি না। প্রতিষ্ঠান শুরুর সময় যে উপকরণ ছিল এখনো সেই উপকরণে চলছে। এখনো পর্যন্ত নতুন কোনো প্রশিক্ষণ উপকরণ পাইনি। প্রয়োজনীয় উপকরণ না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছে। গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালন ও মৎস্য চাষ প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো থাকার পরও আমরা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে পারছি না। প্রতিষ্ঠানটির প্রয়োজনীয় অনেক পদই শূন্য রয়েছে। এ ধরনের একটা ইনস্টিটিউটে হোস্টেল সুপার নেই, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাসহ অনেক পদই শূন্য রয়েছে। যার কারণে মূল কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একজন শিক্ষার্থীর ৯০ টাকায় একদিন খেতে হয় এটা কষ্টকর। ১৭ বছরের আগের বাজেট এখনও চলমান। ১৭ বছরের আগের বাজার দর আর এখানের বাজার দর এখন আকাশ-পাতাল ব্যবধান। যার কারণে প্রশিক্ষণার্থীদের মানসম্মত খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব সমস্যার মধ্যেও এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন নারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। এদের মধ্যে অনেকেই নিজে প্রতিষ্ঠান করে কাজ করছে। আবার অনেকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে সংকটের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর