বৃষ্টির মতো মর্টার শেল ও বোমা ফেলা হয়েছে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চল ‘গোটা’ এলাকায়। এতে দু’দিনে সেখানে কমপক্ষে আড়াইশ’ মানুষ নিহত হয়েছেন। ২০০৩ সালে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার পর দু’দিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা ও লন্ডনের দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়, ‘গোটা’ এলাকায় এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বহু মৃতদেহ। সেখানে যারা উদ্ধার অভিযানে নেমেছেন তাদের এখন প্রথম লক্ষ্য হলো জীবিতদের উদ্ধার করা। মৃতদের বিষয় তাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে না। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি যুদ্ধ বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, শুধু মঙ্গলবারের বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০৬ জন।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬টি হাসপাতাল। এতে তিনটিতে সেবা দেয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে বেশকিছু মানুষ মারা গেছেন। সিরিয়া সংকট বিষয়ক জাতিসংঘের আঞ্চলিক সমন্বয়ক পানোস মুমতিজ বলেছেন, পূর্ব ‘গোটা’ এলাকায় ৪৮ ঘণ্টায় ৬টি হাসপাতালে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমি ভীষণভাবে হতাশ। এ ছাড়া আরো একটি হাসপাতালে হামলা হয়েছে। ফলে সেখানেও সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পূর্ব গোটা এলাকা থেকে দু’সন্তানের মা শামস বলেছেন, মঙ্গলবার থেকে প্রতি মুহূর্তে বোমা হামলা করা হচ্ছে। গোলা এসে আছড়ে পড়ছে। শহরের আকাশে গর্জন করছে যুদ্ধবিমান। গোলা নিক্ষেপ সাময়িক সময়ের জন্য থামলেও তারা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে। সিরীয় সরকারের বিভিন্ন বাহিনী অবিরাম আকাশপথে টহল দিচ্ছে। সামরিক অস্ত্র থেকে গুলি বা বোমা ছোড়া হচ্ছে। এতে দামেস্কে বসবাসকারীদের মধ্যে এক রকম পীড়া সৃষ্টি হয়েছে। দামেস্কে ২০১৩ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন চিকিৎসক খালিদ আবুল আবেদ। তিনি বলেছেন, বর্তমানে এক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তার ভাষায়, এটা অবর্ণনীয়। এটা আমাকে মনে করিয়ে দেয় আলেপ্পোতে দিন ও রাতে টানা কিভাবে গোলা ফেলা হয়েছিল। গোলার আঘাত থেকে কিছুই বাদ যাচ্ছে না। কোনো স্কুল, আবাসিক এলাকা, মার্কেটÑ কিছুই না। এতে আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, ওই এলাকায় জীবনের চিহ্ন নেই বললেই চলে। শহরটিতে প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। সেখানে খাদ্য ও ওষুধ সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের রয়েছে মারাত্মক সংকট।