নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি র্যাঙ্কিংয়েও দ্বিতীয় স্থানে উঠলো অস্ট্রেলিয়া। শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের চেয়ে তারা এখন মাত্র ০.১৯ পয়েন্ট পিছিয়ে। তবে দু’দলের রেটিংই ১২৬। তিন নম্বরে থাকা ভারতের পয়েন্ট ১২২। টি-টেয়েন্টি ফরমেটের এ সিরিজে পাঁচ খেলার সবক’টিতেই জিতলো অজিরা। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে এটাই টি-টোয়েন্টি ফরমেটের প্রথম ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট ছিল। ওয়ানডে ফরমেটের একসময়ের দুর্দান্ত অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি’র র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠতে যাচ্ছে। গত মাসেও অস্ট্রেলিয়া ছিল সাত নম্বরে।
এর আগে এ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জিতে টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে ওঠে পাকিস্তান।
গতকাল অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়াকে ১৫১ রানের টার্গেট দেয় নিউজিল্যান্ড। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে দুইবার বৃষ্টি হানা দেয়। সর্বশেষ যখন বৃষ্টি শুরু হয় তখন অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ১৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১২১ রান। পরে বৃষ্টির কারণে আর খেলা মাঠে গড়াতে পারেনি। ফলে বৃষ্টি আইনে (ডার্কওয়ার্থ লুইস) অস্ট্রেলিয়াকে ১৯ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ১৯৮১ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত টানা ১২ প্রতিযোগিতার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারলো নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া এখনো টি-২০ বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে পারেনি।
অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র আট ওভারে ৭২ রান যোগ করেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ডি’আরচি শর্ট। অধিনায়ক ওয়ার্নারকে ২৫ রানে আউট করে এ জুটি ভাঙেন কিউই স্পিনার ইশ সোধি। পরে দলীয় ১২ রান যোগ করতে আরো দুই উইকেট হারায় অজিরা। শর্ট সর্বোচ্চ ৫০ ও আগার ২ রান করে আউট হন। ৩০ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে এ ইনিংস খেলেন শর্ট। ৫ ম্যাচে এটি তার দ্বিতীয় ফিফটি। আগের খেলাতেই তিনি করেন ৭৬ রান। বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২০ ও অ্যারন ফিঞ্চ ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচসেরা হন স্পিনার অ্যাস্টন আগার। সিরিজ সেরা হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
গত শুক্রবার অকল্যান্ডের এ মাঠেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৪৩ রান করেছিল কিউইরা। অবশ্য ঐ ম্যাচে টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড রান তাড়া করে জয় কুড়ায় অজিরা। ওই খেলায় ছক্কা হয় ৩২টি আর কাল হয় মাত্র ১০টি। গতকালও টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু এবার আর বড় সংগ্রহ হয়নি তাদের। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫০ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে কিউইদের শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও কলিন মানরো। উদ্বোধনী জুটিতে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ৪.৩ ওভারে ৪৮ রান তোলেন দু’জন। পরে ২১ রানে গাপটিলকে আউট করে এ জুটি ভাঙেন অজি পেসার স্ট্যানলেক। তার আউটের পর উইকেটে ধ্বস নামে নিউজিল্যান্ডের। এরপর দলীয় ৫৯ রানে অন্য ওপেনার মানরো ব্যক্তিগত ২৯ রানে সাজঘরে ফেরেন। মানরোর পর অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ৯ ও মার্ক চ্যাপম্যান ৮ রান করে দ্রুত ফিরে যান। পরে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেইলর। শেষ পর্যন্ত টেইলর ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন সাবেক এ অধিনায়ক। ৩৮ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারে এ ইনিংস খেলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্পিনার অ্যাস্টন আগার ২৭ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। দু’টি করে উইকেট নেন কেন রিচার্ডসন ও অ্যান্ডিও টাই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: নিউজিল্যান্ড (ব্যাটিং)
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভার; ১৫০/৯ (টেইলর ৪৩*, আগার ৩/২৭)
অস্ট্রেলিয়া: ১৪.৪ ওভার; ১২১/৩ (শর্ট ৫০, মানরো ১/১৮)
ফল: বৃষ্টি আইনে অস্ট্রেলিয়া ১৯ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: অ্যাস্টন আগার (অস্ট্রেলিয়া)
সিরিজসেরা: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (অস্ট্রেলিয়া)