× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নির্ণয়ের তিন ইস্যু

বিশ্বজমিন

মহুয়া চট্টপাাধ্যায়
(৬ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও এ সম্পর্কে তিনটি প্রধান সমস্যা রয়ে গেছে। তা হলো তিস্তার পানিবন্টন ইস্যু, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আসামে নাগরিকত্ব নির্ধারণের শুমারি (এনআরসি)।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি মুলতবি হয়ে থাকা তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি সমাধানে ভারতকে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন। মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন, যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়। অন্যদিকে তিনি আশা করছেন, আসামে নাগরিকত্বের নিবন্ধন বিষয়ক যে কর্মসূচি (এনআরসি) শুরু হয়েছে তা যেন সীমান্তের এপাশে কোনো প্রতিক্রিয়া বা প্রভাব না ফেলে।
তিনি ঢাকায় তার বাসভবনে ভারতীয় একদল সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় শেখ হাসিনা নিশ্চয়তা দিয়েছেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান হারে যুক্ত হওয়ায় ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেছেন, ‘ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়। আমরা চাই অধিক বিনিয়োগ ও অধিক হারে সহযোগিতা। এটাই আমাদের অগ্রাধিকার। সেক্ষেত্রে ভারত আমাদের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ও অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর ভাল সম্পর্ক থাকা উচিত, যাতে আমরা এ অঞ্চলের উন্নয়ন একসঙ্গে করতে পারি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের একটিই মাত্র শত্রু। তা হলো দারিদ্র্য। সবাই সম্মিলিতভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই করলে তা হবে অধিকতর ভাল পদক্ষেপ’।
তিস্তার পানি বন্টন ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা ও দিল্লির অবস্থানের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দিদি (মমতা) আমাদেরকে পানি দেন নি। এ জন্য আমরা কিছুটা দুঃখ পেয়েছি। যখন আমি পানি চেয়েছি, তিনি আমাদেরকে বিদ্যুত দিয়েছেন। তাই আমি বলেছি, যা কিছু পেয়েছি তা নিয়েই আমাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিত’। ২০১৭ সালের এপ্রিলে দিল্লি সফর করেন শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সর্বশেষ ওই বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে তিনি এসব কথা বলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার কণ্ঠে আশাবাদ ফুটে উঠেছে। তিনি বলেছেন, ‘মমতা না বলেন নি। তিনি বলেছেন, তিনি দেবেন। আমি আশাবাদী যে, এটা (তিস্তার পানি বন্টন) সম্পন্ন হবে’।
যাহোক, রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকাকে সমর্থন করবেন বলে আশা করছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই মিয়ানমারকে আরো চাপ দিক ভারত, যাতে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়। একই সঙ্গে এটা নিশ্চিত করে যে, তারা ফিরে গেলে নিরাপদে থাকবে। ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এটা একটি বড় ঝুঁকি, যা আমরা মানবিক কারণে কাঁধে তুলে নিয়েছি। কিন্তু সামনেই আসছে বৃষ্টির দিন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ধর্ষণের ফলে অনেক নারী অন্তঃসত্ত্বা। আমরা সুনির্দিষ্টভাবে চাই, মিয়ানমারের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করুক ভারত’। তিনি আরো বলেন, ‘ইতিমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে অভিন্ন সীমান্ত আছে, ভারত সহ এমন পাঁচটি দেশের সবার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে আমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছি। মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেয় এবং তাদেরকে নিরাপদ রাখে এ জন্য ওই পাঁচটি দেশকে যৌথভাবে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাতে মন্ত্রণালয়কে ওই নির্দেশ দিয়েছি’। শেখ হাসিনা আরো বলেছেন, বাংলাদেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর ছবি তুলে তাদেরকে পরিচয়পত্র দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি, যাতে পরে মিয়ানমার তাদেরকে তার নাগরিক বলে অস্বীকার করতে না পারে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে এক আলোচনায় বাংলাদেশী রাজনৈতিক নেতারা রোহিঙ্গা ও আসামের এনআরসি ইস্যু তুলে ধরেন। তারা আশা করেন, দু’দেশ এই সময়ে যে অভিন্ন সদিচ্ছা পোষণ করছে তা বজায় রেখে ভারত যেন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে তারা সর্বোৎকৃষ্ট অবস্থার অন্যতম বলে আখ্যায়িত করেন।
(মহুয়া চট্টোপাধ্যায়ের এ লেখাটি আজ অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। ‘তিস্তা, রোহিঙ্গা অ্যান্ড আসাম এনআরসি স্টিকিং পয়েন্টস ইন বাংলা টাইস’ শীর্ষক এ লেখাটির অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ আবুল হোসেন)
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর