বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেয়ার কার্যক্রম শুরু হতে পারে দু’সপ্তাহের মধ্যে। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের যে ৮০২৩ জনের তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছে তা যাচাই বাছাই করতে দু’সপ্তাহের মতো সময় লাগবে। এরই পরই শুরু হতে পারে প্রত্যাবর্তন। মিয়ানমারের সমাজ কল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াত আই বুধবার এ কথা বলেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন মিয়ানমার টাইমস। উল্লেখ্য, বুধবার দেয়া এ বক্তব্যেও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে রোহিঙ্গা হিসেবে উল্লেখ করে নি। মন্ত্রী বলেছেন, যাচাই বাছাই সম্পন্ন হওয়ার পর পরই আমরা প্রত্যাবর্তন শুরু করবো। তিনি আরো বলেন, যাচাই বাছাই শেষ হলে স্থল ও নৌরুটে প্রতিদিন ৩০০ উদ্বাস্তুকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত মিয়ানমার।
অভিবাসন বিভাগ বলেছে, বাংলাদেশের দেয়া তালিকা রেজিস্টার ধরে প্রথমে যাচাই করবে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কর্তৃপক্ষ। একবার তা সম্পন্ন হয়ে গেলে, অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তারা তালিকার সঙ্গে দেয়া ডকুমেন্ট পরখ করে দেখবেন। মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াত আইয়ের ভাষায়, যাচাই বাছাইকৃত তালিকা আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবো। এরপর বাংলাদেশ সবুজ সংকেত দিলেই প্রত্যাবর্তন শুরু করবো আমরা। একই বিষয়ে কথা বলেছেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট অফিসের মুখপাত্র ইউ জাওয়া হতাই। তিনিও বলেছেন, অভিবাসব বিষয়ক কর্মকর্তারা এখন ৮ হাজারের বেশি উদ্বাস্তু প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে যাচাই বাছাই করছেন। যেসব উদ্বাস্তুর সঙ্গে ডকুমেন্ট আছে তাদেরকে গ্রহণ করবে মিয়ানমার সরকার। যতটা দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে কাজ করছি আমরা। উল্লেখ্য, ২৫ শে আগস্ট আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার পর রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে নৃশংসতা শুরু হয়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন শুরু করে। এর ফলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হন। এর বেশির ভাগই মুসলিম। তাদেরকে ফেরত পাঠানো নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি প্রত্যাবর্তন বিষয়ক সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয় নভেম্বরে। তার অধীনে ২৩ শে জানুয়ারি রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিনতু টেকনিক্যাল কারণে তা বিলম্বিত হয়। প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে আলোচনা করতে তাউং পাও লেতউই জেনারেল এডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টে মঙ্গলবার আলোচনায় বসেন দু’েেশর সীমান্ত বিষয়ক কর্মকর্তারা। মংডুর জেনারেল এডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ওই বৈঠকে জিরো লাইন এলাকায় আটকে পড়া লোকজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ওদিকে হাজার হাজার উদ্বাস্তুরা ফিরে যেতে চান না বলে বলা হয়েছে। তারা মনে করেন দেশে ফিরে গেলে নিরাপদ থাকবেন না। মংডু এলাকার জেনারেল এডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের ইউ কাইওয়া কাইওয়া ও বলেছেন, জিরো লাইন এলাকায় অবস্থান করছে ৫ হাজারের বেশি মানুষ। তারা ফিরে যেতে চায় না। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকার জাতীয়তা সনাক্তকারী কার্ড প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করছে। তারা এর আওতায়ও আসতে চায় না। কারণ, তারা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।