× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এএসআইয়ের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ

অনলাইন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
(৬ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৫:০৪ পূর্বাহ্ন

প্রেম করে বিয়ে। তিন বছর পর থেকে নির্যাতন শুরু। করেন দ্বিতীয় বিয়েও। দিচ্ছে না ভরণপোষণ। এমন অভিযোগ চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার এএসআই রেজাউল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী তানজিনা আক্তারের।
নির্যাতনের কারণে ৫ মাসের এক শিশু সন্তান নিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। আর এ নিয়ে পুলিশ কমিশনারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তানজিনাকে কোন প্রকার আইনি সহায়তা দিচ্ছে না পুলিশ।
উল্টো অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে তানজিনাকে রীতিমত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে রেজাউল।
অব্যাহত নির্যাতন আর হুমকির কারনে সোমবার রাতে নগরীর বায়েজিদ থানায় একটি সাধারন ডায়েরিও করেছেন নির্যাতিতা তানজিনা।
লিখিত ডায়েরি ও পুলিশ কমিশনারের নিকট দায়েরকৃত অভিযোগে তানজিনা জানান, চট্টগ্রামের অভিজাত ক্লাব চট্টগ্রাম ক্লাবে বিউটিশিয়ানের কাজ করার সময় রেজাউল ইসলাম মজুমদারের সাথে পরিচয় হয় তানজিনার। এ সময় রেজাউল ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল। পরিচয় থেকে প্রেম এর পর দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় দুজন আবদ্ধ হন পরিণয়ে।
২০১২ সালে ১০ লাখ টাকা দেন মোহর ধার্য্য করে তানজিনাকে বিয়ে করেন রেজাউল। নগরীর বায়েজিদ চা বোর্ড সংলগ্ন ড্রিমল্যান্ড আবাসিক এলাকার মাবিয়া ভবনের ৫ম তলায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন তারা। সংসার জীবনে ৫ মাস বয়সি একটি পুত্র সন্তান রয়েছে তাদের।
আলাপকালে তানজিনা বলেন, বিয়ের পর দুই-তিন‘বছর বেশ ভালই কাটছিল তাদের। দুজনই নিজ নিজ পরিবারের সম্মতি ছাড়াই বিয়ে করেন। এরমধ্যে রেজাউল এএসআই পদে পদোন্নতি পান। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের দক্ষিণ জোনে কর্মরত ছিলেন রেজাউল।
কিন্তু হঠাৎ তানজিনাকে না জানিয়ে নিজ পরিবারকে খুশি করতে রেজাউল তার খালাতো বোনকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর রেজাউলের চলা-ফেরা, আচার-আচরণে সন্দেহ হয় তানিজনার। গোপনে খবর নিয়ে তানজিনা জানতে পারে রেজাউল দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এ নিয়ে তখন থেকে দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তানজিনা রেজাউলের নিকট দ্বিতীয় বিয়ের কারন জানতে চাইলে বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে রেজাউল তানজিনাকে নিজের আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
বিষয়টি নিয়ে সিএমপির দক্ষিণ জোনের উপ পুলিশ কমিশনার এস এম মোস্তাইন হোসাইনের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনা তদন্ত শেষে রেজাউলকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়। এরপর থেকে রেজাউল তানজিনার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করা তানজিনা এত মোটা অংকের টাকা যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
অভিযোগে বলা হয়, রেজাউল সব সময় তানজিনাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করে। প্রতিনিয়ত বাসায় দরজা বন্ধ করে তানজিনাকে বেদম মারধর করে রেজাউল। শুধু শারিরীক নির্যাতন নয়, তানজিনা এবং তার ৫ মাস বয়সী শিশুর ভরণপোষনও ঠিকমত দেয়না রেজাউল। বর্তমানে স্বামীর নির্যাতনের বিচার চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তানজিনা।
তানজিনা জানান, শুধু স্বামী রেজাউল নয় তার পরিবারের প্রায়ই সব সদস্য তাকে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে রেজাউলের বিরুদ্ধে নির্যাতন ছাড়াও আরো নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন তানজিনা। একজন এএসআই হয়েও তার রয়েছে দুটি মোটর সাইকেল। এরমধ্যে একটি আমদানি নিষিদ্ধ ৬ লাখ টাকা দামের কেটিএম ডিউক। ভারতের চোরাই মোটর সাইকেল পাচারকারী সিন্ডিকেটের সাথে তার গভীর স¤পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল ইসলাম মজুমদার বলেন, যৌতুক দাবির অভিযোগ সত্য নয়। মূল কথা হচ্ছে তানজিনার সাথে আমি সংসার করতে চাইছি না। আমার পরিবারও চাইছে না। কিন্তু জোর করে সংসার করতে চাচ্ছে তানজিনা। তাই সে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল এ প্রসঙ্গে বলেন, রেজাউলের স্ত্রী তানজিনা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের একটি অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় রেজাউলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর) তদন্ত করছেন। তদন্তে ঘটনা প্রমানিত হলে রেজাউলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

[এমকে]
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর