× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পদ্মায় ভাসলো ‘শিক্ষাতরী’

বাংলারজমিন

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার

কি রোদ কি বৃষ্টি সব কিছুকে উপেক্ষা করে পদ্মার চরাঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রমত্তা পদ্মানদী পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন নারিশা উচ্চ বিদ্যালয়, নারিশা পশ্চিমচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কবি নজরুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মেঘুলা স্কুল এন্ড কলেজ সহ বেশ কয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসে লেখাপড়া করতে। আর তাদের আসার একমাত্র মাধ্যম লক্কর ঝক্কর ছোট্র ট্রলারে যাতায়াত ব্যবস্থা। এ নৌ পথে একটি ট্রলার থাকার কারণে পদ্মা নদীর বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল নারিশা জোয়ার, কৃষ্ণদেবপুরসহ কয়েকটি চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যেতে খুব হিমশিম খেতে হতো। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে এই চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ট্রলার থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থীরা নৌযানের অভাবে সময়মতো তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারতো না। এ অবস্থায় গত বছরের জেএসসি পরীক্ষায় দুই শিক্ষার্থী পদ্মার চরাঞ্চল নারিশা জোয়ার থেকে পরীক্ষা দিতে পদ্মার পারে এলেও ঘাটে নৌযানের অপেক্ষা করতে করতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এমন ঘটনা দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আল-আমীনের দৃষ্টিগোচর হলে নারিশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন দরানীকে তার অফিসে ডেকে বিষয়টি অবগত হন এবং তিনি এই সমস্যা সমাধানে তার ভূমিকা থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের এমন দুর্ভোগের কথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আল-আমীন ডিডিএলজি ঢাকা জিয়াউল হককে অবগত করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সেই আশ্বাসের ফসল হিসেবে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণে এবার পদ্মায় ভাসলো ‘শিক্ষাতরী’ নামে একটি নৌযান।
আর তাতে ঢাকার দোহার উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন নারিশা জোয়ার, কৃষ্ণদেবপুরসহ কয়েকটি চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা নদীপথে বিনাখরচে ইঞ্জিনচালিত এ নৌযানে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে পারবেন। এতদিন চরাঞ্চলের শ’ শ’ শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌযানে প্রমত্তা পদ্মা পাড়ি দিয়ে স্কুল কলেজে যাতায়াত করতেন। সরকারের অর্থায়নে তৈরি এ নৌযানটি শুধুমাত্র শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নদীপার হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। সরকারের জনবান্ধব এমন একটি উদ্যোগে উচ্ছ্বাসে চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে নারিশা পশ্চিমচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বৃষ্টি আক্তার বলে ‘আমগো বাড়ি ওই নারিশা জোয়ার এ্যালাকায়’ আমি এখন অনেক খুশি যে স্যাররা আমগো স্কুলে আহনের লাইগা একটা ট্রলার দিছে। পঞ্চম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী সাহেরা আক্তার বলে ‘স্যাররা আমগো লাইগ্যা নতুন একট ট্রলার দিছে, ‘এহন আর আমগো চিন্তা হইবো না স্কুলে আহনের লাইগ্যা’ বৃষ্টি, সাহেরার মতো মমতাজ, ইভানা আক্তার, তানজিলা আক্তার, সামিয়া ও সাহাজাদার মতো অনেক শিক্ষার্থী আজ উচ্ছ্বসিত নৌপথে স্কুলে যাওয়ার একটি নির্ভরযোগ্য নৌযান মাধ্যম পাওয়ার জন্য। জানা যায়, দোহারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এম আল-আমিনের উদ্যোগে এলজিএসপি ৩-এর অর্থায়নে নৌযানটি তৈরি করা হয়। প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেন নারিশা ইউনিয়ন পরিষদ। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নৌযানটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ডিডিএলজি ঢাকা জিয়াউল হক। উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্র্রেট ঢাকা কাজী নাহিদ রসুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আল-আমিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালমা খাতুন, নারিশা ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন দরানীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর