× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চট্টগ্রামে এএসআইয়ের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ

দেশ বিদেশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার

প্রেম করে বিয়ে করেছিল তারা। তিন বছর পর থেকে শুরু হয় নির্যাতন। করেন দ্বিতীয় বিয়েও। এমন অভিযোগ চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার এএসআই রেজাউল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী তানজিনা আক্তারের। নির্যাতনের কারণে ৫ মাসের এক শিশু সন্তান নিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। আর এ নিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তানজিনাকে কোনো প্রকার আইনি সহায়তা দিচ্ছে না পুলিশ। উল্টো অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে তানজিনাকে রীতিমত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে রেজাউল। অব্যাহত নির্যাতন আর হুমকির কারণে সোমবার রাতে নগরীর বায়েজিদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছেন তানজিনা।
লিখিত ডায়েরি ও পুলিশ কমিশনারের নিকট দায়েরকৃত অভিযোগে তানজিনা জানান, চট্টগ্রাম ক্লাবে বিউটিশিয়ানের কাজ করার সময় রেজাউল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে পরিচয় হয় তানজিনার।
এ সময় রেজাউল ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল। পরিচয় থেকে প্রেম এরপর দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় দুজন আবদ্ধ হন পরিণয়ে।
২০১২ সালে ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে তানজিনাকে বিয়ে করেন রেজাউল। নগরীর বায়েজিদ চা বোর্ড সংলগ্ন ড্রিমল্যান্ড আবাসিক এলাকার মাবিয়া ভবনের ৫ম তলায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন তারা। সংসার জীবনে ৫ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে তাদের।
আলাপকালে তানজিনা বলেন, বিয়ের পর দুই-তিন‘বছর বেশ ভালোই কাটছিল তাদের। দুজনই নিজ নিজ পরিবারের সম্মতি ছাড়াই বিয়ে করেন। এরমধ্যে রেজাউল এএসআই পদে পদোন্নতি পান। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের দক্ষিণ জোনে কর্মরত ছিলেন রেজাউল।
কিন্তু হঠাৎ তানজিনাকে না জানিয়ে নিজ পরিবারকে খুশি করতে রেজাউল তার খালাতো বোনকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর রেজাউলের চলাফেরা, আচার-আচরণে সন্দেহ হয় তানজিনার। গোপনে খবর নিয়ে তানজিনা জানতে পারে রেজাউল দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এ নিয়ে তখন থেকে দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তানজিনা রেজাউলের নিকট দ্বিতীয় বিয়ের কারণ জানতে চাইলে বিরোধ আরো বেড়ে যায়। একপর্যায়ে রেজাউল তানজিনাকে নিজের আয়ত্তে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
বিষয়টি নিয়ে সিএমপির দক্ষিণ জোনের উপ পুলিশ কমিশনার এস এম মোস্তাইন হোসাইনের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনা তদন্ত শেষে রেজাউলকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়। এরপর থেকে রেজাউল তানজিনার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করা তানজিনা এত মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
অভিযোগে বলা হয়, রেজাউল সব সময় তানজিনাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। প্রতিনিয়ত বাসায় দরজা বন্ধ করে তানজিনাকে বেদম মারধর করে রেজাউল। শুধু শারীরিক নির্যাতন নয়, তানজিনা এবং তার ৫ মাস বয়সী শিশুর ভরণপোষণও ঠিকমতো দেয় না। বর্তমানে স্বামীর নির্যাতনের বিচার চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তানজিনা।
তানজিনা জানান, শুধু স্বামী রেজাউল নয় তার পরিবারের প্রায়ই সব সদস্য তাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে রেজাউলের বিরুদ্ধে নির্যাতন ছাড়াও আরো নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন তানজিনা। একজন এএসআই হয়েও তার রয়েছে দুটি মোটরসাইকেল। এরমধ্যে একটি আমদানি নিষিদ্ধ ৬ লাখ টাকা দামের কেটিএম ডিউক। ভারতের চোরাই মোটরসাইকেল পাচারকারী সিন্ডিকেটের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল ইসলাম মজুমদার বলেন, যৌতুক দাবির অভিযোগ সত্য নয়। মূল কথা হচ্ছে তানজিনার সঙ্গে আমি সংসার করতে চাইছি না। আমার পরিবারও চাইছে না। কিন্তু জোর করে সংসার করতে চাচ্ছে তানজিনা। তাই সে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল এ প্রসঙ্গে বলেন, রেজাউলের স্ত্রী তানজিনা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের একটি অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় রেজাউলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর) তদন্ত করছেন। তদন্তে ঘটনা প্রমাণিত হলে রেজাউলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর