সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক অধ্যাপক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ফের যদি কোন বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন হয়, তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। চরম অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে। যেটা কারো কাম্য নয়।
এমন কোন পরিস্থিতি এড়াতে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা দূরীভূত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সুলতান আহমেদ মিলনায়তনে সুজনের বিভাগীয় পরিকল্পনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বিভাগীয় সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সকল জেলার সুজন এর প্রতিনিধিরা যোগ দেন। এতে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। এতে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বক্তব্য দেন তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এর মূলে হলো নির্বাচনকালীন সরকার কী রকম হবে সেটা। এক দল বলছে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, আরেক দল বলছে সাংবিধানিক কাঠামো সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল নয়।
তিনি বলেন, এ বিতর্ক আজকের নয়, ১৯৯৬ সাল থেকে চলে আসছে। খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন হয়েছিল। তখন খালেদা জিয়ার বক্তব্য ছিল, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই, অতএব সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছিল। ২০০৬ সালে বিএনপি নিজেদের স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তন করেছিল। যাতে তাদের পছন্দের ব্যক্তি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন। ২০০৭ সালে এক-এগারো আসল। ২০১৩ সালে আবারও সংবিধান সংশোধন করা হলো। ২০১৪ সালে আরেকটা বিতর্কিত নির্বাচন হলো। ৯৬ সালে ঐকমত্য ছিল না। ২০০৬-০৭ সালে ছিল না। ২০১৩ সালে ছিল না। এখনো নেই। এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পরিণতি অস্বাভাবিক ও অনাকাঙ্খিত ছিল।
তিনি বলেন, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যদি আবার ঘটে তাহলে এই অস্থিতিশীলতার পরিণতিও হবে অস্বাভাবিক। নাগরিক অবস্থান থেকে করণীয় হচ্ছে যাতে আবারও অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করা। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে। অতীতে এ রকম সহিংসতা হয়নি।
তিনি বলেন, আবারো যদি কোন বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন হয় আর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যদি অস্থিতিশীলতা দূরীভূত না হয় তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।
সভায় চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সিকান্দার খান, প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী, নারীনেত্রী রেহানা বেগম রানু এ সময় উপস্থিত ছিলেন।