× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিরিয়ায় পাঁচদিনে নিহত চার শতাধিক /যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি

দেশ বিদেশ

মানবজমিন ডেস্ক
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার

বৃহস্পতিবার সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটায় সরকারি বাহিনীর হামলায় কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এ নিয়ে গত পাঁচদিনে সেখানে সরকারি বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা চারশ ছাড়িয়েছে। শত শত মানুষ নিহত হওয়ার পরও এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সিরিয়ায় অস্ত্র বিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে সুইডেন ও কুয়েত। কিন্তু এই প্রস্তাবের বিষয়ে একমত হতে পারেনি পরিষদের সদস্যরা। তীব্র মতানৈক্যের কারণে বিষয়টি এখন ভোটাভুটির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে। শুক্রবার নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় সকাল দশটায় এর পক্ষে-বিপক্ষে সদস্য দেশগুলোর ভোট দেয়ার কথা রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদে ৩০ দিনের যুদ্ধ-বিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। কিন্তু এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পৌঁছতে পারেনি পরিষদ। তবে পূর্ব ঘৌটায় দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো ও সেখানে আটকে পড়া মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির পক্ষে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স জোর সমর্থন জানায়। কিন্তু স্থায়ী সদস্য রাশিয়া এতে আপত্তি জানানোর ফলে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। আর সিরিয়ায় কার্যকর ও যৌক্তিক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত। এদিকে, পূর্ব ঘৌটায় সরকারি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। ত্রাণ সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস বলেছে, গত তিনদিনে পূর্ব ঘৌটায় তাদের দেয়া ১৩টি সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে বা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার শতশত আহত মানুষকে সেবা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত জনবলও তাদের নেই। সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, পাঁচদিন ধরে সরকারি বাহিনীর চালানো বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে ৪০৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ জনই শিশু। বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব ঘৌটায় বৃষ্টিপাতের কারণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। তবে দুপুর নাগাদ আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার পর পরই আবার আকাশে বোমারু বিমানের গর্জন শোনা যায়। এগুলো সেখানকার নিরীহ মানুষদের ওপর নির্বিচারে বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। এর মধ্যে রাশিয়ার বিমানও রয়েছে। তবে ঘৌটায় সরাসরি হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। কিন্তু সিরিয়ার সরকারপন্থি  দৈনিক আল ওয়াতানের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমানও যুদ্ধে যোগ দিয়েছে।
সিরিয়ার শত শত মানুষ হত্যা করার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নর্ট বলেছেন, রাশিয়া সিরিয়াকে সমর্থন না দিলে এই ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাযজ্ঞ ঘটতো না। উল্লেখ্য, সিরিয়ার ঘৌটা শহরে প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। বর্তমানে এলাকাটি সরকারবিরোধীদের দখলে। রাজধানীর কাছে এটিই সর্বশেষ এলাকা, যেটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সম্প্রতি এই শহরে অভিযান শুরু করেছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। এতে প্রাণ বাঁচাতে নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে তুলনামূলক নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় গ্রহণ করছে সেখানকার অধিবাসীরা। একটি স্কুলের নিচতলায় আশ্রয় নেয়া ৫৩ বছর বয়সী উব আব্দো বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা ১৪ জন নারী ও শিশু এখানে ১০ ফুটের একটি কক্ষে দিনাতিপাত করছি। এখানে কোনো টয়লেট বা গোসলের ব্যবস্থা নেই।
বৃষ্টির কারণে বৃহস্পতিবার সরকারি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় বিঘ্ন ঘটে। এই সুযোগে স্থানীয় অধিবাসীরা খাবার কেনা, নিজেদের সম্পদ ক্ষয়ক্ষতি যাচাই, আত্মীয়-স্বজনের খবর নিতে আশ্রয়স্থল থেকে বের হয়ে আসেন। ফলে মানুষের ভিড় দেখা যায় দোকানগুলোতে। হামুরিয়ে শহরের একটি দোকানে ক্রেতাদের লাইনে দাঁড়িয়ে জিনিসপত্র কিনতে দেখা যায়। কিন্তু আকাশে বিমানের গর্জন শুনে অনেকেই প্রয়োজনীয় খাবার না কিনেই আশ্রয়স্থলে ফিরে যান। সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোও বিমান হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ফলে বোমা হামলায় আহত মানুষের চিকিৎসা সেবা দেয়ার সুযোগও সীমিত। সব মিলিয়ে শহরটিতে ভয়াবহ এক মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু দ্রুতই এই সংকটের সমাধান হবে এমন সম্ভাবনাও কম।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর