× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আগামী মাসেই জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৬ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮, শনিবার, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

মে মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তরিত হবে ইসরাইলস্থ মার্কিন দূতাবাস। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকীর সঙ্গে মিল রেখে মে মাসে দূতাবাস উদ্বোধনের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই আমেরিকান কর্মকর্তার বরাতে এই খবর দিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস। পরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেয়। খবরে বলা হয়েছে, গত মাসে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ইসরাইল সফরে বলেছিলেন আগামী বছরের শেষের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরিত হবে। কিন্তু তার অনেক আগেই তা হতে যাচ্ছে।
জেরুজালেমের আরনোনায় অবস্থিত কনস্যুলেটকেই বানানো হবে দূতাবাস। নতুন ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হতে কয়েক বছর লেগে যাতে পারে। শুক্রবার কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে বক্তৃতাকালে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
ডনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বসূরি প্রেসিডেন্টরা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া থেকে বিরত ছিলেন। তাদের আশঙ্কা ছিল, এ ধরণের পদক্ষেপ আরবদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করবে। ফলে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত হবে। কিন্তু ট্রাম্প তার পূর্বসূরিদের অনুসরণ করেন নি।
এ বিষয়টি উল্লেখ করে অনেকটা গর্বমিশ্রিত সুরে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা জানেন, প্রত্যেক প্রেসিডেন্ট প্রচারণা চালানোর সময় বলেছিলেন, আমরা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেব। কিন্তু তাদের কেউই শেষ পর্যন্ত ওই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারেন নি। আমি এখন জানি, কেন তারা পারেন নি। আমি যখন জেরুজালেমকে স্বীকৃতির উদ্যোগ নিই, তখন বহু দেশ থেকে চাপ আসে। বহু মানুষ বলতে থাকে যে, এটা করবেন না। কিন্তু আমি তাদেরকে বলেছি, আমাদেরকে এটা করতে হবে, কারণ এটাই সঠিক কাজ।’
তার ওই বক্তব্যের পর অনুমিত সময়ের অনেক আগেই দূতাবাস স্থানান্তরের এই ঘোষণা আসে। ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করে নি। তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারের একজন মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। পরিবহন ও গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসরাইল কাৎস টুইটারে লিখেছেন, ‘ইসরাইলের ৭০ তম স্বাধীনতা দিবসে আমাদের রাজধানীতে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এর থেকে বড় পুরষ্কার কিছু হতে পারে না। এটি সবচেয়ে ন্যায়সঙ্গত ও সঠিক পদক্ষেপ। ধন্যবাদ বন্ধু।’
অপরদিকে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ফিলিস্তিনি নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমেরিকার একাধিপত্য তারা মেনে নেবেন না। দূতাবাস স্থানান্তরের জন্য যে সময় বেছে নেওয়া হয়েছে, তা-ও ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভ বৃদ্ধি করতে পারে। কারণ, ইসরাইলের ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ফিলিস্তিনিদের ‘নাকবা’র ৭০তম বার্ষিকী। কারণ, ইসরাইলের জন্মের পরপরই হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে তাদের নিজ জমি থেকে উৎখাত করা হয়, অথবা তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এরপর থেকে তারা শরণার্থী হিসেবে জীবন যাপন করছেন। ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন দল পিএলও’র সাধারণ সম্পাদক ও দেশটির প্রধান শান্তি আলোচক সায়েব এরেকাত এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়া ও ফিলিস্তিনি জনগণের নাকবা বার্ষিকীতে এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত আইনের চরম লঙ্ঘন।’ তিনি আরও বলেন, যে তারিখ বেছে নেওয়া হয়েছে, তা আরব ও সকল মুসলিমের অনুভূতিতে আঘাত হানবে। দূতাবাস স্থানান্তরের জন্য এই দিনকে বেছে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আমেরিকান কর্মকর্তারা উত্তর দেন নি।
উল্লেখ্য, ইসরাইল অখ- জেরুজালেমকে নিজের রাজধানী হিসেবে মনে করে। তবে বেশিরভাগ দেশই এই দাবিকে স্বীকৃতি দেয় না। ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে চায়। বলপ্রয়োগ করে ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করায় যুক্তরাষ্ট্রের আগে কোনো দেশই জেরুজালেমে নিজেদের দূতাবাস স্থানান্তর করে নি। আমেরিকার ইতিহাসে বেশিরভাগ শান্তি আলোচক মনে করতেন, জেরুজালেম শেষ পর্যন্ত ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয় রাষ্ট্রের রাজধানী হবে। এ কারণে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি না দিতে তারা সবসময় প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিতেন। কিন্তু এবার ট্রাম্প প্রশাসন তার ব্যাত্যয় ঘটিয়েছেন।
এদিকে, ক্যাসিনো ম্যাগনেট, রিপাবলিকান ডোনার ও ইসরাইলের কট্টর সমর্থক শেলডন আডেলসনকে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন দূতাবাস ভবন নির্মাণের আংশিক ব্যয় বহন করতে বলেছে। এই কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, আডেলসন আংশিক ব্যয় নির্বাহ করলে কোনো আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে কিনা তা যাচাই করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর