ডেটলাইন ১৭ই ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ৪০ মিনিট। স্পট সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডস্থ আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট সংলগ্ন কলাপট্টি। এক যৌনকর্মীকে বিনা টাকায় যৌনকর্ম করার প্রস্তাব দেয় তিন যুবক। বিনা টাকায় যৌনকর্ম করতে রাজি না হওয়ায় যুবকরা ক্ষিপ্ত হয়। যৌনকর্মীর পক্ষ নেয় অপর এক যুবক। পরে তিনযুবক ওই যুবককে পেটে ছুরিকাঘাত করে। এগিয়ে এলে আরেক যৌনকর্মীকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে মারা যায় যুবকটি। প্রযুক্তির সাহায্যে এমন একটি ঘটনার মূল হোতা তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এবং শনিবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ে পুলিশ ঘটনার আদ্যপ্রান্ত বর্ণনা করে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-ক) শরফুদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি সাত্তার মিয়া প্রমুখ। পুলিশ জানায়, মানিক ওরফে মেন্টাল মানিক (২৫), আল আমিন (২৩) ও রাব্বি (২৪) ঘটনার দিন রাতে সিদ্ধিরগঞ্জে চিটাগাং রোডস্থ আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট সংলগ্ন কলাপট্টিতে সোনালী নামে এক যৌনকর্মীকে বিনা টাকায় অনৈতিক কাজ করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সোনালী বিনা টাকায় যৌন সম্পর্ক করবে না বলে জানায়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হয় যুবকদের সঙ্গে। উভয়েই কথাকাটাকাটি করতে করতে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক সংলগ্ন মদিনা হোটেরে সামনে আসে। রাত তখন ১২টা ৫০ থেকে রাত ১টা। উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি দেখে আজমেরী আরিফ (২৫) নামে এক যুবক ঝগড়া করতে নিষেধ করে এবং প্রতিবাদ জানায়। তখন আল আমিন, রাব্বি ও মানিক ওরফে মেন্টাল মানিকের সঙ্গে আজমেরী আরিফের কথাকাটাকাটি হয় এবং তিনযুবক আজমেরী আরিফের উপর ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে আজমেরী আরিফ তিন যুবকের মধ্যে একজনের শার্টের কলার চেপে ধরে। এর জের ধরে তিন যুবক আজমেরী আরিফের পেটে ছুরিকাঘাত করে গুরুতরভাবে জখম করে। এতে আরিফের পেটের ভুড়ি বেরিয়ে আসে। এ সময় পাশে থাকা আরেক ভাসমান যৌনকর্মী রিনা বেগম (৩৫) এগিয়ে এলে তাকেও তিন যুবক ছুরিকাঘাত করলে তারও পেটের ভুড়ি বেরিয়ে আসে। এবং ভাসমান সেই যৌনকর্মী সোনালীকেও মারধর করে তিন যুবক পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন আজমেরী আরিফ ও রিনা বেগমকে দ্রুত সিএনজিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি বিকাল সোয়া ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজমেরী আরিফ মারা যায়। এ ঘটনায় নিহত আজমেরী আরিফের মা নিরুতাজ বাদী হয়ে ২০শে ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মানিক ওরফে মেন্টাল মানিক, মো. আল-আমিন ও মো. রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে মর্মে স্বীকার করে পুলিশের কাছে। আসামি মানিক ওরফে মেন্টাল মানিককে বরিশাল জেলার কাজীরহাট থানার পূর্ব রতনপুর এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি ঘটনাস্থলের আশপাশে ময়লার স্তূপ হতে মানিক নিজে বের করে দেয়।