ত্রিপুরায় নির্বাচন হওয়ার দু’দিনের মাথাতেই বেশকিছু অসঙ্গতির কথা জানিয়ে সিপিআইএম দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল। সেই অভিযোগগুলো যে ঠিক, তা কবুল করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের দিন নজিরবিহীনভাবে আড়াইশ’র বেশি ইভিএমে বিভ্রাট দেখা দিয়েছিল। অবশেষে নির্বাচনের আট দিন পরে সেসব অসঙ্গতি দূর করতে নির্বাচন কমিশন তিন দফা নির্দেশ পাঠিয়েছে ত্রিপুরার নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে। নির্বাচন কমিশনের সচিব অরবিন্দ আনন্দ ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (সিইও) শ্রীরাম তরণীকান্তকে চিঠি দিয়ে তিন দফা সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৬শে  ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের ৬টি বুথে পুনঃনির্বাচন হবে। ভোট প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মীদের গাফিলতির কারণেই ৭টি কেন্দ্রের ৭টি বুথে গণনা করা হবে ভি ভি প্যাটের স্লিপে। কোনো নির্বাচনে ভি ভি প্যাটের স্লিপ গুনে ফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত এই প্রথম নেয়া হলো। যেসব কেন্দ্রের বুথে পুনরায় ভোট নেয়া হবে তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার যেখানে প্রার্থী সেই ধনপুর কেন্দ্রও রয়েছে। অন্যদিকে ভিপ্যাটের স্লিপ গণনা হবে যেসব কেন্দ্রের বুথে তার মধ্যে বিজেপির ভাবী মুখ্যমন্ত্রী বলে প্রচারিত বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেবের বনমালীপুর কেন্দ্রও রয়েছে। কমিশনের সচিবের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ওই বুথগুলোতে প্রিজাইডিং অফিসাররা ‘মক টেস্টে’র ফল না সরিয়েই ইভিএম ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন ভোটের জন্য। এদিকে কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, কাঁকড়াবন-শালগড়া, বিলোনিয়া, শান্তিবাজার এবং জলাইবাড়ির একটি করে বুথে মোট ভোটের সংখ্যার সঙ্গে ভোটার সংখ্যার ফারাক ধরা পড়েছে। জয়-পরাজয়ের নিষ্পত্তি সামান্য ভোটে নেমে এলে কমিশনের বিশেষ অনুমতি ছাড়া ওই কেন্দ্রগুলোর ফল ঘোষণা করা যাবে না বলেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আবার  তেলিয়ামুড়ার একটি বুথের ভোট নেয়া ইভিএম অন্যত্র রেখে ফাঁকা যন্ত্র ‘সিল’ করে রাখা হয়েছিল স্ট্রংরুমে। সেই বুথে পুনরায় নির্বাচনের নির্দেশ  দেয়া হয়েছে। এই সব অসঙ্গতির পরিপ্রেক্ষিতে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর জানিয়েছেন, অন্য কেন্দ্রের ভোটাররা এখন সংশয়ে পড়বেন, তা হলে কি তাদের ভোট ঠিকমতো পড়েছে? এই অপরাধমূলক উদাসীনতার সম্পূর্ণ দায় নিয়ে  ভোটারদের কাছে কমিশনকে কৈফিয়ত দিতে হবে বলে তিনি দাবি করেছেন।