লাওস ম্যাচের মধ্যদিয়ে প্রায় ১৮ মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আছে এশিয়ান গেমস, সাফ চ্যাম্পিয়নপিশ। এসবের মাঝেও বেশ কয়েকটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। এর শেষ হবে বঙ্গবন্ধু কাপের মধ্যদিয়ে। নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বরে এ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায় বাফুফে। তাদের ইচ্ছা জাতীয় নির্বাচনের আগেই জাতির জনকের নামে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করা। এদিকে প্রায় দুই বছর পর গেল আসরের চ্যাম্পিয়ন নেপালের প্রাপ্য অর্ধেকের কিছু বেশি প্রাইজমানি পরিশোধ করেছে বাফুফে। ৫০ হাজার ডলারের মধ্যে প্রথম কিস্তিতে বাফুফে পরিশোধ করেছে ৩০ হাজার ডলার।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আলোচনায় থাকে প্রতিবছরই। কিন্তু নানা কারণে আয়োজন করা যায় না। প্রায় ২ যুগ আগে যাত্রা শুরু করা এ টুর্নামেন্ট এখন অনিয়মিত। ২২ বছরে হয়েছে মাত্র চারটি আসর-১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে। বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন তিন বছর আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রতি জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের। কিন্তু পরপর দুই বছর করলেও ধারাবাহিকতা থাকেনি। দুই বছর আগে বাফুফে ঘটা করে ঘোষিত বর্ষপঞ্জিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল আয়োজনের সময় নির্ধারণ করেছিল ২০১৭ সালের ১১ থেকে ২৩শে মার্চ। দুই দফা পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর। এভাবে প্রতিবছর টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা থেকেও সরে আসতে হয়েছে বাফুফেকে। এখন তারা পঞ্চম আসর করতে চাচ্ছে এ বছরের শেষদিকে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ান কোচ অ্যান্ডু্র অর্ডকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সামনে রেখে। দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান, মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান, আসিয়ানের মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগও করেছিল বাফুফে। কিন্তু দেশগুলোর জাতীয় দল প্রস্তুত না থাকায় টুর্নামেন্ট পিছিয়ে দেয় বাফুফে। এর সঙ্গে যোগ হয় স্পন্সর সংকট।
গুঞ্জন রয়েছে জাতীয় দলের ভরাডুবি এবং কর্মকর্তাদের অস্বচ্ছতায় জাতির জনকের নামের এই টুর্নামেন্ট আয়োজনেও স্পন্সর সংকটে পড়ে বাফুফে। তারপরও গেলো আসরের চ্যাম্পিয়ন নেপালকে যথাসময়ে প্রাইজমানি পরিশোধ না করায় সংবাদের শিরোনাম হয় বাফুফে। এতে টুর্নামেন্টে অংগ্রহণে অনীহা দেখায় পার্শ্ববর্তী দেশগুলো। এরই মধ্যে আশার খবর হলো নেপালের অর্ধেক প্রাইজমানি পরিশোধ করে আরেকটি আসরের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাফুফে। এবার দক্ষিণ এশিয়ার দু’টি দেশের বেশি আমন্ত্রণ জানাবে না বাফুফে। কারণ, সেপ্টেম্বরেই ঢাকায় হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। তাই ভারত ও মালদ্বীপ ছাড়া এ অঞ্চলের অন্য কোনো দেশকে বঙ্গবন্ধু কাপে দেখা নাও যেতে পারে।
২৭শে মার্চ লাওসের বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলবে জাতীয় দল। আগস্টে আছে এশিয়ান গেমস, মে-জুনে রমজান, সেপ্টেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ শুরু হবে অক্টোবরে। তাই নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বর ছাড়া বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজনের সুযোগও নেই বাফুফের। এ কারণে বছরের শেষে নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বঙ্গবন্ধু কাপ আয়োজন করতে চায় বাফুফে। এমনটাই জানালেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। ‘আসলে আমরা বছর জুড়েই বঙ্গবন্ধু কাপ আয়োজনের চেষ্টা করছি। কিন্তু সময়ের অভাবে করতে পারেনি। তবে বছরের শেষ দিকে এটি আয়োজনের চেষ্টা করবো আমরা’- বলেন তিনি।