ম্যাচের শুরুতে লেজের জোর দেখায় প্রাইম ব্যাংক। ৮ ও ৯ নম্বর ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় ইনিংস শেষে ২৫৯ রানের পুঁজি পায় তারা। জবাবে ক্রিজে নৈপুণ্য দেখান মোহামেডানের আট ও নয় নম্বর ব্যাটসম্যান। এতে শেষ পর্যন্ত রুদ্ধশ্বাস জয় কুড়ায় মোহামেডান। গতকাল ঘরোয়া লিস্ট-এ আসর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (ডিপিডিএল) খেলায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে দলীয় ২০৫ রানে সাজঘরে ফেরেন মোহামেডানের ইনফর্ম ব্যাটসম্যান রকিবুল হাসান। এতে ৪০তম ওভার শেষে ২০৫/৭ সংগ্রহ নিয়ে আশা ফিকে হয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের। তবে ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখান মোহামেডানের দুই বাঁ-হাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র ও তাইজুল ইসলাম। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি-৩) মাঠে ২৬০ রানের টার্গেটে তিন উইকেটে জয় দেখে মোহামেডান।
৮ ও ৯ নম্বরে ব্যাট হাতে এনামুল হক জুনিয়র ৩২ ও তাইজুল ইসলাম খেলেন ৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস। অষ্টম উইকেটে এ দু’জন গড়েন ম্যাচজয়ী অবিচ্ছিন্ন ৫৫ রানের জুটি। এতে ৭ বল হাতে রেখেই টার্গেট পার করে মোহামেডান। এদিন টস জিতে প্রাইম ব্যাংককে ব্যাটিংয়ে পাঠান মোহামেডানের অধিনায়ক শামসুর রহমান শুভ। বল হাতে ইনিংস ওপেন করেন তাইজুল ইসলাম। আর শুরুতেই প্রতিপক্ষকে ফেলেন বিপাকে। নিজের চতুর্থ ওভারে বল হাতে জোড়া আঘাত হানেন তাইজুল। ব্যক্তিগত ৫ রানে ওপেনার মেহেদি মারুফ ও ৮ রানে উইকেট খোয়ান প্রাইম ব্যাংকের ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান জাকির হাসান। আর পঞ্চম ওভারে তাইজুল রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরান প্রাইম ব্যাংকের ভারতীয় ব্যাটসম্যান ইউসুফ পাঠানকে। এতে ৮.৪তম ওভার শেষে ১৬/৪ সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা নামে প্রাইম ব্যাংক শিবিরে। আর ১৩.৪তম ওভার শেষে প্রাইম ব্যাংকের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৬/৬-এ। তবে এরপর ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখান আল আমিন। চার নম্বরে ব্যাট হাতে দারুণ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে এনে দেন লড়াইয়ের পুঁজি। আর ম্যাচে তাইজুল ইসলামের অলরাউন্ড নৈপুণ্য সত্ত্বেও ম্যাচসেরার পুরস্কার পান বিজিত দলের আল আমিনই। ১২৬ বলে ১১০ রানের ইনিংসে আল আমিন হাঁকান ৯টি চার ও দুটি ছক্কা। প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসে আট নম্বরে ব্যাট হাতে ৮৭ রান করেন আরিফুল হক। ৯ নম্বর ব্যাটসম্যান দেলোয়ার হোসেন করেন ২৫ রান। প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসে ব্যক্তিগত এক অঙ্কের রানে সাজঘরে ফেরেন ৮ ব্যাটসম্যান (দু’জন অপরাজিত)। আর প্রাইম ব্যাংকের ব্যাটিংক্রমের শীর্ষ ৭ ব্যাটসম্যানের ছয়জনই সাজঘরে পেরেন ব্যক্তিগত এক অঙ্কের রানে। মোহামেডানের বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে ৫৫ রানে তিন উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। আর ভারতীয় বাঁ-হাতি স্পিনার বিপুল শর্মা ১০ ওভারের স্পেলে ৪২ রানে নেন দুই উইকেট। জবাবে ওপেনিংয়ে ৬০ রানের জুটি গড়েন মোহামেডানের দুই সহোদর ভাই রনি ও জনি তালুকদার। জনি ব্যক্তিগত ১৫ রানে উইকেট খোয়ালেও লিস্ট-এ ক্যারিয়ারের অষ্টম অর্ধশতক পূর্ণ করেন রনি তালুকদার। তবে অল্প ব্যবধানে চার উইকেট খুইয়ে বিপাকে পড়ে মোহামেডানও। ইরফান শুকুরের বিদায়ে ২০.৪তম ওভার শেষে মোহামেডানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯২/৪-এ। তবে পঞ্চম উইকেটে ৭০ রানের জুটি গড়ে ম্যাচে মোহামেডানের জয়ের সম্ভাবনা ধরে রাখেন রকিবুল হাসান ও অনূর্ধ্ব-১৯ তারকা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। ভারতীয় ব্যাটসম্যান বিপুল শর্মা করেন ৯ রান। প্রাইম ব্যাংকের বল হাতে ৯.৫ ওভারের স্পেলে ৪১ রানে দুই উইকেট নেন পেস তারকা রুবেল হোসেন। আসরের শুরুর দুই ম্যাচে হার দেখেছিল মোহামেডান। তবে পরের টানা তিন ম্যাচে জয় দেখলো তারা। চলতি ঢাকা লীগে পাঁচ ম্যাচে পূর্ণ ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে তারকাখচিত দল আবাহনী লিমিটেড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডান-প্রাইম ব্যাংক
টস: মোহামেডান, ফিল্ডিং
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট: ৫০ ওভার; ২৫৯/৯ (আল আমিন ১১০, আরিফুল ৮৭, আমিনুল ২৫, তাইজুল ৩/৫৩, বিপুল ২/৪৩, অনিক ২/৪৭, শুভাশিস ১/৫৬)।
মোহামেডান স্পোর্টিং: ৪৮.৫ ওভার; ২৬২/৭ (রকিবুল ৬৪, রনি ৬০, তাইজুল ৩৫*, এনামুল (জু.) ৩২*, রুবেল ২/৪১, দেলোয়ার ২/৪৯, আরিফুল ১/৩৭, ইউসুফ ১/৪৪)।
ফল: মোহামেডান ৩ উই. জয়ী
ম্যাচসেরা: আল আমিন (প্রাইম ব্যাংক)
ডিপিডিএল তালিকা
দল ম্যাচ জয় হার প.
আবাহনী ৫ ৫ ০ ১০
শাইনপুকুর ৫ ৩ ২ ৬
রূপগঞ্জ ৫ ৩ ২ ৬
মোহামেডান ৫ ৩ ২ ৬
শেখ জামাল ৫ ৩ ২ ৬
দোলেশ্বর ৫ ৩ ২ ৬
গাজী গ্রুপ ৫ ২ ৩ ৪
ব্রাদার্স ৫ ২ ৩ ৪
অগ্রণী ব্যাংক ৫ ২ ৩ ৪
খেলাঘর ৫ ২ ৩ ৪
প্রাইম ব্যাংক ৫ ১ ৪ ২
কলাবাগান ৫ ১ ৪ ২