× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, সোমবার

সরকারি সব চাকরিতে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত হাজার হাজার শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভে অংশ নেন। পূর্ব ঘোষণানুযায়ী দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ-মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকেই শাহবাগে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টায় বিক্ষোভ করতে চাইলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুইজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোটা বাতিলের পক্ষে নই। কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। দাবি মেনে নিলে মেধাবী ও যোগ্য লোকেরা দেশ পরিচালনায় সুযোগ পাবে। তখন দেশ শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত হবে। কোটা প্রথা সংস্কারে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি  তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে কমিয়ে আনতে হবে, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যাবে না। এমনকি সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা চালু করতে হবে আর কোটায় যোগ্য প্রার্থী না থাকলে শূন্য পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বৈষম্যহীন সোনার বাংলা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। যে দেশে কোনো বেকার সমস্যা থাকবে না। অথচ দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বৈষম্য এখন প্রকট আকার ধারণ করছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ জমছে। কোটা সংস্কারের দাবিই সেই ক্ষোভ প্রকাশের বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, দাবি আদায়ে পূর্ব ঘোষণানুযায়ী আজকে জমায়েত হয়েছি। আগামী ৩রা  মার্চের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ৪ঠা মার্চে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কালো ব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা। এদিকে সকাল ১১টা থেকেই শাহবাগের গণগ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হতে থাকা আন্দোলনকারীদের মুখে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটা বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই’, ‘এক দফা এক দাবি, কোটা প্রথার সংস্কার চাই’, আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মেনে নাও’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। আর নানা রঙে লেখা সংবলিত প্লাকার্ড হাতে হাজার হাজার আন্দোলনকারী উপস্থিত হতে থাকে। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভ প্রদর্শনে বাধা দিয়ে তাদের থেকে মাইক কেড়ে নেয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অবিচল থেকে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পুলিশি বাধাকে উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেয় জাতীয় জাদুঘরের সামনে। দাবির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার-দিন বদলের ইশতেহারে মেধার প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ও ৪৪ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া মেধাকে অবমূল্যায়নের নামান্তর। এতে যেমন বৈষম্য বাড়ছে তেমনি তরুণদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এইচএম ইমরান বলেন, সংবিধানে অনগ্রসর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সুবিধার আওতায় কোটা ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। এই সুযোগে অগ্রসর সব মুক্তিযোদ্ধা যদি এই সুবিধা ভোগ করে তাহলে এটা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কাজ হবে। আমাদের আন্দোলন বৈষম্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে না। আন্দোলনকারী চুয়েটের শিক্ষার্থী শামস বলেন, কোটা সুবিধা অস্থায়ী ও বিশেষ অবস্থা বিচারে। এটাকে রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগের ধারাবাহিক মাধ্যম করা স্বাধীনতা চেতনা বিরোধী বলে জানান তিনি।

এদিকে প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি শেষে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যায়। প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন- শাহিদ নিলয়, জোবায়ের আহমেদ, আল মামুন ও বায়েজিদ। পুলিশের রমনা জোনের উপ-কশিনার মারুফ হোসেন সর্দার বলেন, আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। বইমেলাকে কেন্দ্র করে ফেব্রুয়ারি মাসে এ এলাকায় কাউকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হয় না। তার ওপর তাদের অনুমতিও নেই। তাই তাদের মাইক নিয়ে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আবার দিয়ে দেয়া হয়েছে। আন্দোলনে কোনো বাধা দেয়া হয়নি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর