× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টেকনাফের পাহাড়ে আগুনের নেপথ্যে

বাংলারজমিন

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
১১ মার্চ ২০১৮, রবিবার

উখিয়া-টেকনাফে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে হাজার হাজার একর সবুজ বনভূমি পাহাড় ধ্বংস করে দিয়েছে। উপড়ে ফেলেছে গাছের শিকড় পর্যন্ত। লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য গড়ে তুলেছে বাসস্থান। ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর যে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে সেখানে টেকনাফের সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশ কিছুটা স্বস্তি দিয়ে আসছিল। কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা সেই বনায়ন বা পাহাড়কে ধ্বংস করতে সামাজিক বনায়ন ও পশু খাদ্য বাগানসহ প্রাকৃতিক পাহাড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ করে দিনের বেলায় পাহাড়ে দাউ দাউ আগুন জ্বলতে দেখে টেকনাফবাসীসহ পুরো প্রশাসনের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাহাড়ের প্রায় ৪০টি পয়েন্টে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ১০০ একর সৃজিত বাগানসহ কয়েকশ’ একর প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা বাগান পুড়ে যায়।
পাশাপাশি পুড়ে গেছে বন্য পশুদের জন্য সৃজিত ২৫ একর খাদ্য বাগানও। বনবিভাগসহ উপজেলা প্রশাসন আগুন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করলেও বাতাসের গতিবেগ থাকায় প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকে সবুজ বন। অবশেষে বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, ওই ঘটনায় টেকনাফ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং কে বা কারা আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত তা তদন্ত করতে টেকনাফ সদরের সহকারী বন সংরক্ষক দেওয়ান মো. আবদুল হাই আজাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এসব দুষ্কৃতকারীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এঘটনায় এপর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, পুড়ে যাওয়া পাহাড়ে সামাজিক বনায়নে আকাশমনি গাছের বাগান সৃজিত করা হয়েছিল। সেই গাছগুলো প্রায় পুড়ে গেছে। যদি বৃষ্টি হয় অনেক চারা গজাতে পারে। তবু দ্রুত বনায়ন সৃজনের জন্য আজ থেকে নার্সারি করা হচ্ছে। দুর্বৃত্তের এই আগুনে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে ১২টা পর্যন্ত পুরো পাহাড় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকতে দেখা গেছে। সকালে কক্সবাজার জেলার দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আলী কবির পুড়িয়ে যাওয়া পাহাড় পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে উখিয়া-টেকনাফের প্রাকৃতিক দৃশ্যঘেরা বনভূমিকে ধ্বংস ও দখল করার জন্য একটি দুষ্কৃতকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে ঘাপটি মেরে বিভিন্ন অপরাধ ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। তারা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। পাহাড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া তাদেরই কাজ এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না টেকনাফের সাধারণ মানুষ। এছাড়া রোহিঙ্গাদের বসবাসের সুযোগ করে দিতে অদৃশ্য দুর্বৃত্ত পাহাড়ে আগুন ধরিয়েছে এমন মন্তব্যও শোনা যাচ্ছে। তাছাড়া ভূমিদস্যুরা পাহাড়ি জমি দখল করার পাঁয়তারার বিষয়টিও এড়িয়ে যাচ্ছে না স্থানীয় সচেতন মহল।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ বছর ধরে মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা আবদুল হাকিম ডাকাত গহীন পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে এলাকায় ডাকাতি, খুন-গুম ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তাকে নির্র্মূলে গত এক মাস ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলন ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। এমনকি উপজেলা পরিষদ ঘেঁষে পুরান পল্লান পাড়ায় ওই হাকিম ডাকাতের বসত বাড়িতে এলাকাবাসী হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাকিম ডাকাতকে তাড়াতে পাহাড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও এড়িয়ে যাচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা। টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, টেকনাফের পাহাড়ে আগুন দেওয়ার বিষয়ে টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর