× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চট্টগ্রামে জাপার কর্মীশূন্য সমাবেশে সংঘর্ষ

দেশ বিদেশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
১১ মার্চ ২০১৮, রবিবার

চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মী সমাবেশ নিয়ে তেমন প্রচার ছিল না। গত শুক্রবার বিকালে একরকম নীরবেই হচ্ছিল এই সমাবেশ। কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ দফায়-দফায় সংঘর্ষ আর চেয়ার ছোড়াছুড়িতে সরব হয়ে উঠে সমাবেশস্থল।
দলটির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার এমপি, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর উপস্থিতিতেই বাধে এই সংঘর্ষ।
চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সোলায়মান আলম শেঠ এবং সাবেক সভাপতি মাহজাবীন মোরশেদের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। সোলায়মান আলম শেঠ ও মাহজাবিন মোরশেদ নিজেই এ সময় সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে সংঘর্ষে যারা লিপ্ত হন তাদের সবাই নেতা। কর্মী ছিল না তেমন। অথচ এই সমাবেশটি ছিল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মী সমাবেশ।
যেখানে চট্টগ্রাম বিভাগের খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার জেলা ও উপজেলা পর্যায় থেকে ৫০-৬০ জন নেতা এবং চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর-দক্ষিণ জেলা ও উপজেলা থেকে শতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন মাত্র। এমন তথ্য দলের একাধিক নেতার।নেতারা জানান, কর্মী সমাবেশ উপস্থিত নেতাদের মধ্যে সিংহভাগই ছিল চট্টগ্রাম মহানগর জাপার সাবেক সভাপতি মাহজাবিন মোরশেদ এমপির অনুসারী। ১৫-২০ জন নেতা ছিল সোলায়মান আলম শেঠের অনুসারী। যারা কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে পাল্টাপাল্টি সেøøাগান দেন। আর এ নিয়ে বাঁধে সংঘর্ষ। নেতারা প্রথমে একে অপরের সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়, সেই সঙ্গে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পরে শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। এতে অন্তত ২০ জনেরও বেশি নেতা আহত হয়েছেন। ভেঙে চুরমার হয়েছে শতাধিক চেয়ার। যার অধিকাংশই খালি ছিল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, জাতীয় পার্টির সমাবেশে সংঘর্ষে আহত হয়ে ১৩ জন নেতা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। কাটা-ছেঁড়ায় ব্যান্ডিজ লাগিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে তারা চলে গেছেন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, বিভাগীয় কর্মী সমাবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে এই সংঘর্ষ বাধিয়েছে। তবে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের পর আমরা সমাবেশ করেছি। প্রধান অতিথি পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন। বক্তব্যে তিনি কলহ ছেড়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পার্টিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন।
প্রধান অতিথি বলেন, জাতীয় পার্টি সংবিধান, গণতন্ত্র ও জনগণে বিশ্বাসী। তাই মানুষ জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। সুশাসন চায়। দেশবাসী পরিবর্তন চায়। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। দেশে সুশাসন, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য আগামী নির্বাচনে যাবে জাপা। এজন্য আগামী ২৪শে মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে লাখ লাখ লোকের সমাগম করা হবে। আর চট্টগ্রাম থেকে এ পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হলো বলে মতপ্রকাশ করেন সোলায়মান আলম শেঠ।
কর্মী সমাবেশে কর্মীর উপস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর-দক্ষিণ ও চার জেলার হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। বেশি নেতাকর্মী যেখানে সেখানে বিশৃঙ্খলা একটু হবেই।
কিন্তু মাহজাবিন মোরশেদ এমপি বলেন অন্য কথা। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে সোলায়মান আলম শেঠের কোনো জনসমর্থন নেই। কোনো নেতাকর্মী নেই তার। সমাবেশে গুটিকয়েক লোককে টাকা-পয়সা দিয়ে এনেছেন তিনি। যারা সমাবেশকে প- করার জন্য পরিকল্পিত উপায়ে সংঘর্ষ বাধায়।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা যত ষড়যন্ত্রই করুক এরশাদের জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আনতে সব নেতা-কর্মীকে উজ্জীবিত হতে হবে। ৯ বছর সুশাসনের পর ১৯৯০ সালে জাতীয় পার্টি ক্ষমতা হন্তান্তর করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু তৎকালীন জাতীয় পার্টির সব নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছিল। তাতে দল আরও শক্তিশালী হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টিতে কোন্দল দীর্ঘদিনের। নগর কমিটির দুই নেতা সোলায়মান আলম শেঠ এবং মাহজাবিন মোরশেদ এমপির অনুসারীদের মধ্যে এর আগেও সংঘর্ষ হয়েছে। সোলায়মান আলম শেঠ মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন।
কিন্তু দলীয় কোন্দল আর নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে সরিয়ে মাহজাবিন মোরশেদ এমপিকে আহ্বায়ক করে। কিছুকাল এই দায়িত্ব পালনের পর ফের সোলায়মান আলম শেঠকেই নগর কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। দুই নেতার কর্মী-সমর্থকের মধ্যে পর¯পরবিরোধী ক্ষোভ আগে যেমন ছিল এখনো তেমনই রয়েছে।





অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর