ডিবি'র এসি সেজে পুলিশের এসআই পদে চাকরির লোভ দেখিয়ে শিক্ষিত বেকার যুবকদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন ফিরোজ আলম চৌধুরী ওরফে আলম সাহেব (৬০)।
শেষ পর্যন্ত তার এই প্রতারণা বুঝতে পেরে আসল ডিবির কাছে এই ভুয়া প্রতারককে ধরিয়ে দেন ভুক্তভোগী এক যুবকের অভিবাবক।
১০ই মার্চ শনিবার রাতে চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার সাহেরখালী গজারিয়া এলাকা থেকে এই ভুয়া এসি ফিরোজ আলমকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি হুমায়ুন কবির অভিযানে নেতৃত্ব দেন। ফিরোজ আলম মিরসরাই উপজেলার গজারিয়া এলাকার বড় বাড়ীর মৃত গোলাম সামদানীর ছেলে বলে জানান এডিসি হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, ফিরোজ আলম মাথায় পুলিশের ক্যাপ পরে ছবি তুলে নিজেকে এসি ডিবি পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। তার গ্রামের লোকজনের কাছে বলে বেড়াতেন তিনি পুলিশের পক্ষ থেকে বিদেশে মিশন শেষ করে দেশে ফিরেছেন।
সম্প্রতি পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে একই গ্রামের কয়েকজন যুবকের অভিবাবকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে প্রতারণা করেন।
এ ঘটনায় নগরীর কোতেয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় ফিরোজ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ফিরোজ আলম চৌধুরী নিজেকে ডিবি পুলিশের এসি এবং তার এক সহযোগীকে পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) পিএস পরিচয় দিয়ে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ করিয়ে দেবে মর্মে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে।
তারা হাজী মো. সিরাজুল ইসলামকে তার বন্ধুর ছেলে মো. মোরশেদ এবং তৌহিদুলকে এসআই পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের নিয়ে ঢাকায় যান এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ঘোরাফেরা করে তাদের আশ্বস্ত করেন, আইজিপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে, চাকরি হবে।
পরে গত ৬ই ফেব্রুয়ারি ঢাকাস্থ ইমপেরিয়াল হোটেলে অবস্থানকালীন চাকরি হয়েছে জানিয়ে প্রতারকরা দেড় লাখ টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত এসআই নিয়োগের শারীরিক মাপ চলাকালীন সময়ে প্রার্থীদ্বয়কে দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে কৌশলে একপাশে দাঁড় করিয়ে রেখে তারা আরো দুই লাখ টাকা গ্রহণ করে।
পরে প্রতারককে ফোন দিয়ে না পেয়ে হাজী মো. সিরাজুল ইসলাম সিএমপির ডিসি-ডিবিকে (বন্দর) বিষয়টি অবহিত করে প্রতারকদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. কামরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, মামলার সূত্র ধরে প্রতারক ফিরোজ আলম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ফিরোজ অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তার পরবর্তী সে ডিবি পুলিশকে প্রতারণা করে পালানোর কৌশল অবলম্বন করে নিজে নিজের জিহ্বায় কামড় দিয়ে রক্তবমির ভান করে। বর্তমানে তিনি পুলিশ প্রহরায় চমেক হাসপাতালে ভর্তি আছেন।