সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল কিশোর গ্যাংয়ের চার কিশোর। রোববার রাতে এমন তথ্য প্রকাশ করে চট্টগ্রাম মহানগর সদরঘাট থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, শনিবার গভীর রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের এই চার কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার কিশোররা হলো-ইসলামিয়া কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র শাকিল (১৮), মাদারবাড়ি সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. মুক্তাদির রহমান অপি (১৮), পলোগ্রাউন্ড রেলওয়ে বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শাহিদ আজ-মাঈন সিয়াম (১৮) এবং সরকারি সিটি কলেজের একই শ্রেণির ছাত্র এ আল কিবরিয়া ওরফে তুষার (১৮)। আর ঘটনার শিকার ছাত্রের নাম মেহেদী হাসান মিসতাদ (১৩)। সে পশ্চিম মাদারবাড়ির সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সদরঘাট থানার ওসি নেজাম উদ্দিন জানান, গত ১০ই মার্চ শনিবার রাত ৮টার দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে শুভপুর বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে মেহেদীকে অপহরণ করে গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাংয়ের চার কিশোর। এরপর কলেজিয়েট স্কুলের পাশে পুকুর পাড়ে নার্সারির পেছনে নিয়ে মেহেদীকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়।
এ সময় মেহেদীকে মাটিতে ফেলে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় অপহরণকারীরা। একপর্যায়ে শ্বাস বন্ধের উপক্রম হলে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে মেহেদী। এরপর তাকে মৃত ভেবে চলে যায় অপহরণকারীরা। পরে মোবাইল ফোনে মেহেদীর মায়ের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। কিন্তু রাত ১১টার দিকে জ্ঞান ফেরার পর মেহেদী নিজেই বাসায় চলে আসে। থানায় এজাহার দেয়ার পর রাত আড়াইটার মধ্যে অভিযান চালিয়ে মেহেদীকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চার কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওসি নেজাম উদ্দিন আরো জানান, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে মেহেদী অপহরণকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যায়। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে মুক্তিপণের টাকা দেয়ার কথা বলে পুলিশ কৌশলে অপহরণকারীদের মধ্যে তিনজনকে ডেকে আনে মাদারবাড়ির বালুর মাঠ এলাকায়। এ সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মেহেদীর পরনের প্যান্ট ও পরে স্কুলব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। মারধরে আহত মেহেদী এখন আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে একটি মামলা করা হয়েছে।