× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বর্বরতা /স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর ট্যাংকে ফেলে দেয় দপ্তরি

শেষের পাতা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
১৩ মার্চ ২০১৮, মঙ্গলবার

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নের কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ৯ বছরের এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর ছুরিকাঘাত করে  সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়েছে ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি আপন চন্দ্র মালী (৫০)। সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুলছাত্রীর নিথর ও রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে রোববার দিনগত রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা ধর্ষক আপন চন্দ্র মালীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উত্তেজিত জনতার হাত থেকে দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আপন চন্দ্র মালী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। এ সময় চিৎকার শুরু করায় তাকে দেয়ালে ধাক্কা ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে মৃত ভেবে তাকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।

হাটহাজারী ধলই ইউপির সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য সুলতানা রিজিয়া জানান, শিশুটি কাটিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী।
তার বড় ভাই কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। ওই ছাত্রী এক বান্ধবীকে নিয়ে রোববার দুপুরে তার ভাইকে টিফিন দিতে বিদ্যালয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীকে তার ভাই কোথায় জিজ্ঞেস করলে দোতলায় আছে জানিয়ে তাকে সেখানে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে কোনো শিক্ষার্থী ছিল না। এ সুযোগে আপন চন্দ্র মালী ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে ছাত্রীটি চিৎকার শুরু করে। এ সময় আপন চন্দ্র মালী মেয়েটির গলায় ধরে স্কুলের দেওয়ালের সঙ্গে  ধাক্কা দেয়। এতে ছাত্রীটির মাথা ও মুখের একপাশে রক্তাক্ত গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে সে মেয়েটির গলায় ছুরিও চালায়। পরে মৃত ভেবে ছাত্রীটিকে বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আপন চন্দ্র মালী।

দীর্ঘক্ষণ স্কুল থেকে ওই ছাত্রী না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজ করতে থাকে। বিকালের দিকে দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীর কাছে জানতে চাইলে সে এলোমেলো উত্তর দেয়। এতে সন্দিহান হয়ে লোকজন স্কুলে গিয়ে ছাত্রীটিকে খুঁজতে থাকে। এ সময় সেপটিক ট্যাংকে গোঙানির শব্দ শুনে গিয়ে খুঁজে পান ছাত্রীটিকে।

প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে প্রথমে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় ওই ছাত্রীকে। পরে স্থানীয় জনতা পাষণ্ড আপন চন্দ্র মালীকে তার বাড়ি থেকে আটক করে কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়।

এরপর কয়েক হাজার জনতা আপন চন্দ্রের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। অবস্থা বেগতিক দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশে সংবাদ দেয়। সন্ধ্যার দিকে থানার এএসআই কফিল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আপন চন্দ্রকে আটক করে। পরে পুলিশ সেপটিক ট্যাংকের পাশে জমাট বাঁধা রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম জানান, মেয়েটির গলায় এবং মুখে বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সে বর্তমানে হাসপাতালের ১৯নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর।
কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকছুদ আহমদ বলেন, শিক্ষক ধর্মঘট থাকায় রোববার তিনি বিদ্যালয়ে যাননি। খবর পেয়ে তিনি ওই ছাত্রীকে দেখতে চমেক হাসপাতালে যান। তার আগেই স্কুলের দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর