রিতু ও হাফসা দুই বান্ধবী। দু’জনই কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মাঝিহাট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। রিতু বরাবরই সব পরীক্ষায় প্রথম হয়ে আসছে। কিন্তু রিতুর এই ভালো ফলাফল কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি বান্ধবী হাফসার পরিবার। এ কারণে প্রতিশোধ নিতে রিতুকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন হাফসার মা ইয়াসমিন খাতুন ও বাবা মিনারুল ইসলাম। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের মাজিহাট গ্রামে অমানবিক এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হাফসার মা ইয়াসমিন খাতুনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার পর থেকেই রিতু অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
পুলিশ জানায়, গত ৭ই মার্চ বিকেলে বান্ধবী হাফসা এসে রিতুকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। ওই বাসায় যাওয়ার পর রিতুকে এক গ্লাস পানি খেতে দেন হাফসার মা ইয়াসমিন খাতুন। এর পরপরই রিতুর আর কিছুই মনে নেই। কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরলে বুঝতে পারে সে তার বান্ধবী হাফসার বাড়িতে ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছে। এছাড়াও তার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়া হয়েছে এবং তার মাথায় কালো রংয়ের একটি কাপড় জড়িয়ে রাখা হয়েছে। রিতুর পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই দিন বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর সন্ধ্যার পরও রিতুর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এ সময় রিতুর চাচাতো বোন বৃষ্টি রিতুকে খুঁজতে হাফসাদের বাড়িতে যায়। কিন্তু হাফসার মা তাকে জানায়, রিতু তাদের বাড়িতে আসেনি। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে রিতু বাড়িতে ফিরে। এ সময় তার মাথায় কালো কাপড় জড়ানো দেখে পরিবারের সদস্যরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রিতু জানায়, পানি খেতে দেয়ার পরে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং জ্ঞান ফিরলে তার মাথায় কালো কাপড় জড়ানো দেখতে পায়। চুল কেটে দেয়ার বিষয়টি রিতুর পরিবারের লোকজন হাফসাদের বাড়িতে গিয়ে জানতে চাইলে হাফসার বাবা মিনারুল ও মা ইয়াসমিন খাতুনসহ পরিবারের সদস্যরা রিতুর বাবা-মার ওপর চড়াও হন। এসময় তারা হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তোর মেয়ের চুল কেটে দিয়েছি যা পারিস তাই করিস। চেয়ারম্যান থানা সব আমাদের নিয়ন্ত্রণে। কেউ কিছু করতে পারবে না।’ রিতুর বাবা মা বিষয়টি স্থানীয় কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর আলীকে মৌখিকভাবে জানান। চেয়ারম্যান ওমর আলী জানান, রিতুর বাবা-মা আমার কাছে এসেছিল। এলাকার মাতব্বররা না থাকায় আমরা বসতে পারিনি। তবে আমরা চেষ্টা করছি উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে সমঝোতার জন্য।