× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
১৩ মার্চ ২০১৮, মঙ্গলবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী মিয়ানমার নাগরিকদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সেদেশকে রাজি করাতে সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোয় মিয়ানমারকে বোঝানোর জন্য তিনি আসিয়ানের সভাপতি রাষ্ট্র হিসেবে সিঙ্গাপুরের প্রতি এই আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু আসিয়ানের সভাপতি রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর তারা যেন মিয়ানমার সরকারকে বোঝায় এদের (বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের) ফিরিয়ে নেয়ার মধ্যেই ঐ এলাকার স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন নির্ভর করছে। শেখ হাসিনা গতকাল সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় একথা বলেন। সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এবং প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ইস্তানায় দু’প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাসস জানিয়েছে, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় প্রেস সচিব ইহসানুল করিমও উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা এবং সিঙ্গাপুরে জাহাজ ভেড়ার পর নাবিকদের ওঠানামা নিয়ে সমস্যাটি আলোচনায় প্রাধান্য পায়।
তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় নিয়ে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয় নিয়েও আলাপ হয়েছে। এর আগে শেখ হাসিনা ইস্তানায় সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট হালিমা ইয়াকুবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গারা আমাদের ওপর বোঝা হিসেবে দেখা দিয়েছে এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলাপ-আলোচনা করে এদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। কিন্তু নানাবিধ কারণে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে সিঙ্গাপুরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দু’নেতার আলোচনায় একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, সিঙ্গাপুর এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো অর্থনৈতিক সহযোগিতা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ। এ ব্যাপারেই বেশি আলোচনা হয়েছে। মো. শহীদুল হক বলেন, একই সঙ্গে কানেকটিভিটি বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে আকাশপথে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপরও তারা আলাপ করেছেন এবং সমুদ্রগামী নাবিকদের জাহাজ নোঙরের পর সিঙ্গাপুর বন্দরে ওঠানামায় যে সমস্যা হয় সেই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট হালিমা ইয়াকুব এবং প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দু’দেশের সুবিধাজনক সময়ে এই সফর আয়োজনের বিষয়ে সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন বলেও পররাষ্ট্র সচিব জানান। শহীদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সব খাতে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ আহ্বান করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে খাদ্য ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং জ্বালানি খাত। সমুদ্রগামী নাবিকদের জাহাজ নোঙরের পর সিঙ্গাপুর বন্দরে ওঠানামায় সমস্যাটি সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে আগ্রহ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরকে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ব্যবধান ঘোচাতে আরো ব্যাপক বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার সরকারের গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা কামনা করেন। সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট হালিমা ইয়াকুবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন বলেও পররাষ্ট্র সচিব জানান। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সমতার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
দু’টি সমঝোতা স্মারক সই: এদিকে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর গতকাল পিপিপি এবং বিমান চলাচল সংক্রান্ত দু’টি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। স্মারক দুটি হচ্ছে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্ব (পিপিপি) বিষয়ক সমঝোতা স্মারক এবং এয়ার সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত কনফিডেন্সিয়াল সমঝোতা স্মারক। সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ইস্তানায় দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংয়ের উপস্থিতিতে স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব এসএম গোলাম ফারুক এবং সিঙ্গাপুরের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব তান গাই সেন উভয় দেশের এয়ার সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত কনফিডেন্সিয়াল সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর করেন। প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ অথরিটি (পিপিপিএ)-র সিইও সৈয়দ আফসর এইচ উদ্দিন এবং সিঙ্গাপুরের আন্তর্জাতিক এন্টারপ্রাইজের সহকারী সিইও তান সুন কিম উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্ব (পিপিপি) বিষয়ক অপর সমঝোতা স্মারকটিতে স্বাক্ষর করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর