× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জালিয়াতি করে সরকারি চাকরি!

এক্সক্লুসিভ

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে
২৩ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার

জালিয়াতির মাধ্যমে স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে ৪ মাস আগে সরকারি চাকরি করেছেন সুলতানা রাজিয়া। জাতীয় পরিচয় পত্র রেখেও তিনি দুই উপজেলায় করেছেন ২টি জন্ম নিবন্ধন। জেলার কসবা উপজেলার পৌর এলাকা শাহপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা রাজিয়া। আর জালিয়াতির মাধ্যমে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের রাজামারিয়া কান্দি গ্রামের স্থায়ী নাগরিক সেজে চাকরি নিয়েছেন। তার এ জালিয়াতির কারণে চাকরিবঞ্চিত হয়েছেন সরাইল উপজেলার একজন নাগরিক। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে লিখা ছিল শূন্য বা সৃষ্ট পদ না থাকায় কসবা উপজেলার প্রার্থীদের আবেদন করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু কসবার রাজিয়া প্রকৃত স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে রাতারাতি সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের রাজাবাড়িয়া কান্দি গ্রামের স্থায়ী নাগরিক সেজে তৈরি করেছেন জন্ম নিবন্ধন (নং-১৯৯৫১২১৯৪৮৫১০৬৩২৫)।
জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই আবেদন করেছেন রাজিয়া। অথচ ওই গ্রামে মহিউদ্দিন আহমেদ বা তার মেয়ে সুলতানা রাজিয়া নামের কেউ নেই। এমনকি ভোটার তালিকায়ও এমন নাম নেই। সার্ভিস বুকেও তিনি শাহবাজপুরের ঠিকানাই লিপিবদ্ধ করেছেন। সরাইলের কোটায় চাকরি নেয়ার জন্যই রাজিয়া এই অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেছেন। আর তখন সহকারী শিক্ষক পদে সরাইল উপজেলায় নিয়োগ পেয়েছেন ২ জন। তাদের একজন কসবার সুলতানা রাজিয়া। রাজিয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৬ই নভেম্বর সরাইল উপজেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করেন। তাকে পোস্টিং দেয়া হয় শাহজাদাপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। যোগদানের পর সরাইল জনতা ব্যাংকে হিসাব খুলতে যান রাজিয়া। আইডি কার্ডের জটিলতায় প্রথমে একটু সমস্যা হলেও পরে যে কোনো উপায়ে শুধু জন্ম নিবন্ধন দিয়ে হিসাব খুলে দিয়েছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সঞ্চয়ী হিসাব নং- ১০০১১৬৫৪৯৪৬২ এর মাধ্যমে সরকারি বেতনও উত্তোলন করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস রাজিয়ার জাতীয় পরিচয় পত্রটিও কসবার শাহপুরের (কোড নং- ৩৪৬০)। এনআইডি নং- ১৯৯৫১২২৬৩০১০০০০০৩। শাহপুর (১ম অংশ) ওয়ার্ডের ৭২২ ক্রমিক নাম্বারধারী ভোটার রাজিয়া। শাহপুরে জন্ম নিবন্ধন নং- ১২১১৩৫০০০২৫৩।  আর সরাইলের শাহবাজপুর এলাকার জন্ম নিবন্ধন নং-১৯৯৫১২১৯৪৮৫১০৬৩২৫। শাহবাজপুর ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. এলেক মিয়া বলেন, রাহাত আলী, মহিউদ্দিন, সুলতানা রাজিয়া এরা কেউ আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা বা নাগরিক না। ভোটারও না। ইউপি চেয়ারম্যান রাজিব আহমেদ রাজ্জি ক্ষোভের সঙ্গে  বলেন, এটা শতভাগ জালিয়াতি। প্রতারণাও বটে। তৎকালীন চেয়ারম্যানের অসুস্থতার সুযোগে অফিসকে ম্যানেজ করেই হয়ত বা জন্ম নিবন্ধন নিয়ে গেছে। এটা খুবই গর্হিত কাজ। আমি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রাজিয়ার নিয়োগ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। কসবার শাহপুর গ্রামে রাজিয়াদের বাড়ি। বিয়ে না হওয়ায় পিতার পরিচয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। রাজিয়ার দাদার নাম রাহাত আলী ভূঁইয়া। তাদের বসতবাড়ি কসবা উপজেলার পৌর শহরের শাহপুর ভূঁইয়া বাড়ি এলাকায়। পিতা-মহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে নাবালক। তিনি ২০১৫ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন।
সরাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে নিয়োগদানকারী হিসাবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ব্যবস্থা নিবেন। তবে তথ্য জালিয়াতি প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষক বরখাস্ত হতে পারে। এ বিষয়ে মুঠোফোনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক বলেন, নিয়োগ পত্রের শর্তে উল্লেখ রয়েছে কোনো ধরনের ভুয়া বা জালিয়াতি প্রমাণিত হলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে অথবা আইনানুগ পক্রিয়ায় চাকরি বাতিল হয়ে যেতে পারে। তদন্ত চলছে। প্রমাণিত হলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর