× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ৮ মে ২০২৪, বুধবার , ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কর্মক্ষেত্রে বিষণ্নতা

এক্সক্লুসিভ

তারুণ্য ডেস্ক
২৩ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার

কাজ জীবনের অপরিহার্য অংশ। জীবনের প্রয়োজনে আমাদের কাজ করা লাগে। কাজ মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। তবে, অনেক সময় বিভিন্ন কারণে কাজে অনীহা তৈরি হয়। ভর করে হতাশা। এই হতাশা ঘনীভূত হতে হতে এক সময় তৈরি হয় গাঢ় বিষণ্নতা। কর্মক্ষেত্র আবেদন হারায়।
ভালো লাগে না অফিসে যেতে। কর্মক্ষেত্রের এই বিষণ্নতা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ব্যক্তিজীবনেও।

কীভাবে বুঝবেন আপনি কর্মক্ষেত্রে বিষণ্ন কী না
ইদানীং কাজে যেতে কী অনীহা বোধ করছেন? কাজে কোনো আগ্রহ খুঁজে পাচ্ছেন না? কাজ করার সময় মনে রাজ্যের বিরক্তি এসে ভর করছে? সহকর্মীদের সঙ্গে একদম মানিয়ে নিতে পারছেন না? বারবার ঘড়ির কাঁটায় তাকিয়ে কাজ শেষ হবার সময় গোনেন কিংবা অফিসে সময় কাটতেই চায় না? ঘুমানোর সময় পরের দিন উঠে আবার কাজে যেতে হবে- এটা ভেবে বিরক্তিবোধ করেন? এসব প্রশ্নের হ্যাঁ হলে ধরে নিতে হবে আপনি কর্মক্ষেত্রে অবসন্ন বোধ করছেন।

কী হয় কর্মক্ষেত্রে বিষণ্নতায়
কর্মক্ষেত্রে বিষণ্নতায় ভুগলে তা জীবনে, কাজে নানা রকম প্রভাব তৈরি করে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ব্যাপার তুলে ধরা হলো-
কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া: কর্মক্ষেত্রে বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তির পারফর্মেন্সের গ্রাফ নিম্নমুখী হতে থাকে। কাজের মান নিচে নেমে যায়।
নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া: বিষণ্ন কর্মজীবীদের নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ কমে আসতে থাকে। চাপ নেয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। অল্পতেই অবসাদ ভর করে মনে।

সমপর্কে অবনতি হওয়া: ক্রমাগত মানসিক চাপের ফলে বিষণ্ন কর্মজীবীর অন্যদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়। ক্লায়েন্টদের সঙ্গে আর আগের মতো আন্তরিকতা কাজ করে না। সহকর্মীদের সঙ্গেও তাই। এর ছাপ পড়ে পারিবারিক এবং ব্যক্তিজীবনেও।

মনোযোগে ঘাটতি আসা: বিষণ্ন ব্যক্তির কাজে মনসংযোগের ঘাটতি দেখা দেয়। যে কাজ আগে অল্প সময়ে দক্ষতার সঙ্গে করে ফেলতেন, সেই একই কাজে সময় বেশি লাগে। আগ্রহ কমে যায়।

আনন্দহীনতা দেখা দেয়া:  কর্মক্ষেত্রে অবসাদ সৃষ্টি হলে কাজে আনন্দ খুঁজে পাওয়া দায়। বিষণ্ন কর্মীর মনে কাজের প্রতি যেহেতু এক ধরনের অনাসক্তি তৈরি হয়, তাই তিনি কাজে আনন্দ খুঁজে পান না।

কীভাবে কাটাবেন কর্মক্ষেত্রে বিষণ্নতা
কর্মক্ষেত্রে বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়া একদম অস্বাভাবিক কিছু না। কিছু নিয়ম অনুসরণ করে এটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ ব্যাপারে কিছু পরামর্শ নিচে তুলে ধরা হলো-

১.    কাজের চেয়ে নিজ’কে বেশি গুরুত্ব দিন: জীবনে কাজ জরুরি। তবে জীবনের চেয়ে বেশি জরুরি না। বিষণ্নতা মানুষকে শারীরিক ও মানসিক- উভয়ভাবে আক্রান্ত করে। কাজ করার জন্যে আপনার মনোদৈহিক সুস্থতা অত্যন্ত প্রয়োজন। সুস্থতা না থাকলে কিন্তু চাকরিও থাকবে না। তাই সুস্থ থাকতে হবে দেহ এবং মনে। আপনি যে পেশার মানুষ হন না কেন, পাশাপাশি কারো সন্তান কিংবা পিতা, কারো বন্ধু, কারো স্বামী অথবা স্ত্রী, কারো ভালোবাসার মানুষ। কাজের জন্যে আপনার জীবন নয়, জীবনের জন্যে কাজ।

২.    অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলুন: কর্মক্ষেত্রে যেসব জায়গায় অসঙ্গতি বোধ করছেন, তা নিয়ে ঊর্ধ্বস্তন কর্মকর্তার সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন। কীভাবে সমস্যা কাটানো যায় তা নিয়ে পরামর্শ চান। এ বিষয়ে নিজের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ থাকলে নিঃসঙ্কোচে খুলে বলুন। কোনো প্রসঙ্গে অমত থাকলে কিংবা কোনো নির্দিষ্ট কাজে অপারগ হলে- সেটাও জানিয়ে দিন।

৩.    একঘেয়েমি দূর করে নিন: কাজে একঘেয়েমি আসার ফলেও অনেক সময় তৈরি হয় বিষণ্নতা। কাজের ধরনে হালকা বৈচিত্র্য অনেকক্ষেত্রে অবসাদ দূরীকরণে সহায়ক। পারলে নতুন কোনো দায়িত্ব নিন। নতুন কিছু করতে পারাটা মনে নতুন উদ্দীপনা এনে দেয়।

৪.    জীবনের জন্য সময় রাখুন: আমাদের দিনের একটা বড় অংশ কাটিয়ে দিতে হয় কর্মক্ষেত্রে। অনেক সময় দেখা যায়, দিনভর আমরা কাজেই ডুবে আছি। এভাবে দিনের পর দিন কাটিয়ে দেই। এটা জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই চেষ্টা করুন কাজের বাইরে ব্যয়কৃত সময়ের পরিমাণ বাড়ানোর। নতুন কোনো শখ গড়ে তুলুন। যোগাযোগ করুন আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে। জীবনে শিথিলতা থাকা ভীষণ জরুরি।

৫.    ছুটি কাটান: ছুটির দিনগুলোকে নষ্ট হতে দেবেন না। ছুটি উপভোগ করুন। পারলে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ুন। একঘেয়ে কর্মজীবন আর ব্যক্তিজীবনের টানাপড়েন থেকে অল্প একটু অবকাশ উদযাপন মনে প্রশান্তি এনে দেয়। জীবনে মাঝে মাঝে বৈচিত্র্য আনাটা ফলদায়ী।

৬.    চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনুন: চাকরিজীবী হিসেবে নিজেকে অফিসের দাস না ভেবে বরং একটি বৃহত্তর প্রক্রিয়ার অংশ ভাবুন। ভেবে দেখুন আপনার ভূমিকা সামগ্রিকভাবে মানুষের ওপর, সমাজের ওপর, দেশের ওপর কী ভূমিকা রাখছে। কাজের মাধ্যমে আপনি কিন্তু শুধু নিজের জন্যে নয়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমস্ত পৃথিবীর জন্যে কোনো না কোনোভাবে একটা অবদান রাখছেন। এ পৃথিবীতে আপনার ভূমিকা নগণ্য হতে পারে, কিন্তু অদরকারী নয়!

(বিজনেস ইনসাইডার-এ প্রকাশিত নিবন্ধ অবলম্বনে)
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর