× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মা ফিরে আসবেন বিশ্বাসে ৩ বছর মৃতদেহ ফ্রিজে

রকমারি


৫ এপ্রিল ২০১৮, বৃহস্পতিবার

রবিনসন স্ট্রিটের চেয়েও ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থাকলেন বেহালার ঘোলাপুরের জেমস লং সরণির বাসিন্দারা। মায়ের মৃতদেহ গত তিন বছর ধরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখার অভিযোগ উঠল লেদার টেকনোলজির মেধাবী পড়ুয়া শুভব্রত মজুমদারের বিরুদ্ধে। পুলিশ ও প্রতিবেশী সূত্রে খবর, প্রায় তিন বছর আগে শুভব্রতর মা বীণাদেবীর মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যুর পর মায়ের দেহ দাহ না করে বাড়িতেই ফ্রিজের মধ্যে সংরক্ষণ করে রাখেন শুভব্রত। তাঁর আশা ছিল, বিজ্ঞানের একদিন এমন উন্নতি হবে যে, মায়ের মৃতদেহে প্রাণ ফিরে আসবে। মৃতদেহে যাতে কোনও বিকৃতি না ঘটে, তাই একেবারে বিশেষজ্ঞদের ধাঁচে মায়ের পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বার করে রাসায়নিক মাখিয়ে দেহ বড় ফ্রিজারে ঢুকিয়ে রাখে ছেলে।কোলকাতা থেকে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিদিনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে বেহালা থানার পুলিশ ওই বাড়িতে হানা দেয়। বাড়ির ভিতরে ঢুকে দুঁদে পুলিশকর্মীদের চোখ কপালে ওঠে।
তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, ফ্রিজের ভিতর বীণাদেবীর মৃতদেহ ‘মমি’র মতো সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। শুভব্রতর বাবা গোপাল মজুমদারও এই ঘটনার কথা জানতেন বলে পুলিশ মনে করছে। বীণাদেবী সরকারি চাকুরে ছিলেন। তাঁর পেনশনের লোভে গোপালবাবু ও তাঁর ছেলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কি না, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। জেমস লং সরণির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে আইসক্রিম রাখার একটি বড় ফ্রিজার যেখানে মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয়। শুভব্রত ও গোপালবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ এই ঘটনার শিকড়ে পৌঁছতে চাইছে। যদিও পুলিশই স্বীকার করছে যে এমন ঘটনা শহরের বুকে শেষ কবে ঘটেছে, তাঁরা মনে করতে পারছেন না। কারণ, ভয়াবহতার বিচারে এই কাণ্ড রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল-কাণ্ডকেও পিছনে ফেলে দিচ্ছে।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, শুভব্রতর বয়স ৫০-এর বেশি নয়। আগে তিনি বানতলায় চর্মনগরীতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত। অত্যন্ত মেধাবী এই ছাত্র পড়াশোনা করতেন লেদার টেকনোলজি নিয়ে। প্রতিবেশীরাই জানাচ্ছেন, কিছুদিন পর কাজ ছেড়ে শুভব্রত বাড়িতেই থাকতেন মা বীণা মজুমদার ও বাবা গোপাল মজুমদারের সঙ্গে। সেই সময় তাঁর স্বভাবেও বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। ওই বাড়িতে গত ২০ বছর ধরে কেউ ঢোকেননি বলে জানা গিয়েছে। বাড়িতে আসতেন না শুভব্রতদের কোনও আত্মীয়স্বজনও। পাড়ার লোকেদের সঙ্গেও ওই বাড়ির সদস্যরা বিশেষ কথা বলতেন না কোনওদিনই। প্রতিবেশীরা জানতেন, বছর তিনেক আগে বীণাদেবী মারা গিয়েছেন। স্বামী ও ছেলে দাবি করতেন, বীণাদেবীর দেহ পিস হাভেনে রাখা রয়েছে। কিন্তু আদতে বাড়িতেই ওই দেহ মমি করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। ছেলের বিশ্বাস ছিল, মা একদিন ফিরে আসবেনই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তাহীনতা ও মায়ের প্রতি অগাধ আস্থা এই কাণ্ড ঘটাতে পারে। তবে শুভব্রতর মানসিক সুস্থতা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন। একাকীত্ব গ্রাস করতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেও এরকম কাণ্ড ঘটতে পারে বলেই বিশেষজ্ঞদের অনুমান। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর