পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেবার দিন বাড়বে কিনা তা এখন আদালতের উপর নির্ভর করছে। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনয়ন জমা দেবার বাধা দূর করার আরজি জানিয়েছিল। একই সঙ্গে বাম দলগুলিও একই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের কাছে সুরাহার জন্য আবেদন করতে হবে। বৃহষ্পতিবার সেই শুনানী হবে। এর আগে অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার তারা হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে কোনও অভিযোগ থাকলে তা নির্বাচন কমিশনারকে সুরাহার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে মনোনয়ন আগের নির্দেশিকা অনুযায়ী সোমবার শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিন স্তরে প্রার্থী মনোনয়নের যে তালিকা নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশ করা হযেছে, তা থেকে স্পষ্ট যে, শাসক দলের সশস্ত্র বাধায় সাড়ে ৫৮ হাজার আসনের মধ্যে বিরোধীরা ২৪ হাজারের বেশি আসনে মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি।
অন্যদিকে পঞ্চায়েতের তিন স্তরে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে ১৪ হাজারের বেশি অতিরিক্ত মনোনয়ন জমা পড়েছে। অর্থাৎ মোট ৫৮৬৯২টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হযেছেন ৭২৮৮৪ জন। সেই সঙ্গে এবার রেকর্ড সংখ্যক নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিযেছেন। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী তৃণমূল কংগ্রেস গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮ হাজার ৬৫০টি আসনের জন্য ৫৯ হাজার ৪৭৫ টি মনোনয়ন জমা করেছে। অন্যদিকে পঞ্চায়েত সমিতির ৯ হাজার ২১৭টি আসনের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস ১২ হাজার ৩৪৩টি মনোনয়ন জমা করেছে। আর জেলা পরিষদের ৮২৫টি আসনের জন্য শাসক দল মনোনয় জমা করেছে ১০৬৬টি। এই অতিরিক্ত মনোয়নই শাসক দলের কাঁটা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তৃণমূল কংগ্রেস যদিও জানিযেছে, এরা কেউ গোঁজ বা বিক্ষুব্ধ প্রার্থী নয়। সময় মত সকলেই নাম প্রত্যাহার করে নেবেন। তবে অনেকের ধারণা, চাপ দিয়ে কিছু নাম প্রত্রাহারের ব্যবস্থা করা গেলেও দলৈর অনুগত্য বঞ্চিত অনেকেই প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের সময়দানে থেকে যাবেন। এদিকে বিরোধীদের মধ্যে ভারতীয জনতা পাঠিৃই সবচেয়ে বেশি াাসনে প্রার্থী দিযেছে। বিজেপি গ্র্রাম পঞ্চাযেতে ২৭৭৮৯ টি, পঞ্চাযেত সমিতিতে ৫৯৫২টি এবং জেলা পরিষদের ৭২৬ টি আসনে মনোনয়ন জমা দিতে সমর্থ হয়েছে। সিপিআইএমসহ বামরা মনোনয়ন জমা দিযেছে গ্র্রাম পঞ্চাযেতে ১৯৭১৪ টি, পঞ্চাযেত সমিতিতে ৪৮০৩টি এবং জেলা পরিষদের ৬৬৫ টি আসনে। আর কংগ্রেস তিন স্তরে মোট ৯২৬২টি আসনে মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে। বিরোধীদের মতে, জেলা পরিষদের মনোনয়ন যেহেতু মহকুমা শাসকের অফিসে হয়েছে তাই সেখানে বাধা তীব্র হয়ে ওঠেনি। কিন্তু বিডিও অফিসে মনোনয় দেওয়ার ক্ষেত্রেই সব চেয়ে বেশি শাসক দলের সশস্ত্র পাহারাদারদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আর শাসকদলের হাতে মহিলাদেরও নিগৃহীত হতে হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা দাবি করছেন, সাংগঠনিক জোর নেই বলেই প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। আর নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতে সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে।