পাঁচ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে মিয়ানমারের দাবিকে ‘প্রপাগান্ডা’ আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ। সরকার বলেছে, মিয়ানমার এখনো কোন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয় নি। পাঁচ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি পুরোটাই ‘প্রপাগান্ডা’। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরও অভিন্ন মন্তব্য করেছে। সংস্থাটি বলেছে, কোন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে এমন তথ্য তাদের কাছে নেই। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খবরে বলা হয়, পাঁচ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআরের কাছে কোন তথ্য নেই। এই ধরনের কোন রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত নন।
বাংলাদেশের শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের মধ্যবর্তী কোনারপাড়া অঞ্চলে পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার অবস্থান নেয়। মিয়ানমারের দাবি অনুযায়ী, শনিবার তারা মিয়ানমারে ভূখন্ডে ফিরে যায়। সেদেশের কর্তৃপক্ষ তাদেরকে শরণার্থী প্রত্যাবর্তনের জন্য নির্মিত ‘রিসেপশন সেন্টারে’ আশ্রয় দেয়। তিনি বলেন, ‘কোনভাবেই এটি প্রত্যাবাসন নয়। বরং এটি একটি ‘প্রপাগান্ডা’।
আর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে বলেছে, কোন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে এমন কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোন আলোচনা করা হয় নি। খবরে প্রকাশ হওয়া তথাকথিত প্রত্যাবাসনের সঙ্গে ইউএনএইচসিআরের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তবে মিয়ানমার সরকারে মুখপাত্র জ হতে বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের খবর কোন প্রপাগান্ডা নয়। পরিবারটি স্বেচ্ছায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা তাদের দেখভাল করছি। এর আগে শনিবার মধ্যরাতে এক বিবৃতিতে মিয়ানমার জানায়, তারা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া এক রোহিঙ্গা পরিবারকে ফিরিয়ে নিয়েছে। পাঁচ সদস্যের পরিবারটিকে রাখাইনের ‘রিসেপশন সেন্টারে’ রাখা হয়েছে। বিবৃতিতে পরিবারের এক সদস্যের নাম আফতার আর লুয়ান বলে উল্লেখ করা হয়। উল্লেখ্য, গত আগস্টে শুরু হওয়া সহিংসতার কারণে রাখাইনের প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রাদায় রাখাইনে জাতি নির্মূল অভিযান চালানোর অভিযোগ তুলেছে। তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। দেশটি দাবি করেছে, তারা শুধুমাত্র উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। জানুয়ারিতে বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। আগামী দুই বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয় মিয়ানমার। সে অনুযায়ী প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক অবস্থানের জন্য মিয়ানমারে দুইটি ‘রিসেপশন সেন্টার’ নির্মাণ করা হয়। তবে সমঝোতা হলেও এখনো পর্যন্ত কোন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয় নি মিয়ানমার।