দেশ ভাগ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি হচ্ছে ডিজিটাল আর্কাইভ। এ ব্যাপারে একটি যৌথ গবেষণা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে ভারতের নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। শনিবার কলকাতায় আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রে এ কথা জানিয়ে নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব হিউম্যানিটিজ বা মানববিদ্যা অনুষদের অধিকর্তা মননকুমার ম-ল বলেছেন, গোটা রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশ ভাগের নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরে একটি ডিজিট্যাল আর্কাইভ হচ্ছে। সেই সঙ্গে দুই বাংলার বর্ণময় মানুষদের নিয়ে নানা চর্চা চলছে। এই গবেষণা প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবেই আলোচনা সভায় উঠে এসেছিল বর্ণময় কৃতী বাঙালি আবুল মনসুর আহমদের কথা। মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা, অনুবাদ ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র এবং ঢাকার আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সভায় যোগ দিয়েছিলেন সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বাংলাদেশের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, ভারতের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাধন চক্রবর্তীসহ দুই বাংলার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট জনেরা। আবুল মনসুর আহমদের জীবনের নানা দিক উঠে আসে আলোচনায়। অবিভক্ত বাংলায় রাজনীতি, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর সান্নিধ্য লাভ, কলকাতায় সাংবাদিকতার পরে ঢাকায় আওয়ামী লীগের আদি যুগের নেতা আবুল মনসুর পাকিস্তান আমলে মন্ত্রীও হয়েছিলেন।
স্মৃতি সংসদের তরফে আবুল মনসুর সাহেবের পুত্র তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক-সম্পাদক মাহফুজ আনাম জানিয়েছেন, তার বাবার ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের কথা।
দেশ ভাগ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রকল্পটিতে এ দিনের আলোচনার বিভিন্ন দিকও কাজে লাগানো হবে বলে জানানো হয়েছে। আলোচনা সভায় ’দেশ ভাগ, হিন্দু-মুসলমান বিরোধ ও আবুল মনসুর আহমদের ব্যঙ্গরচনা’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. চেঙ্গীশ খান। ‘সমকালীন পূর্ববঙ্গ ও আবুল মনসুর আহমদের কথাসাহিত্য’ শীর্ষক আরেকটি প্রবন্ধ যৌথভাবে পাঠ করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বরেন্দু ম-ল ও সাংবাদিক স্নেহাশিস শূর। এ ছাড়া ‘আবুল মনসুর ও বাঙালি মুসলিম মানসের ক্রমবিবর্তন (১৯৪০-১৯৭০)’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আবুল মনসুর আহমদের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়েছে।