দেশের অন্যতম শীর্ষ সংগীত তারকা আসিফ আকবর। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। এতটা দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবার পরও ক্লান্তিহীনভাবে শ্রোতাদের জন্য নতুন সব গান রেকর্ডিং করছেন নিয়মিত। ‘অডিও যুবরাজ’ খ্যাত এ সংগীতশিল্পী বর্তমানে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার পুরো ব্যস্ততাই নতুন গান নিয়ে। চলতি বছর তার গাওয়া বেশ কয়েকটি গানই শ্রোতাপ্রিয়তায় চলে এসেছে। চলতি এপ্রিলেও তিনি একাধিক গান নিয়ে ছিলেন সরব। নিজের প্রযোজন প্রতিষ্ঠান আর্ব এন্টারটেইনমেন্ট থেকে নিয়মিত গান করছেন।
এর বাইরে অন্য প্রযোজন প্রতিষ্ঠান থেকেও আসিফের অডিও-ভিডিও নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে। সব মিলিয়ে দারুণ ব্যস্ত সময় এখন পার করছেন তিনি। কেমন আছেন? দিনকাল কেমন কাটছে? আসিফ আকবর বলেন, অনেক ভালো আছি। আর দিনকাল তো ব্যস্ততার মধ্যে দিয়েই কাটছে। পরিবারকে সময় দিচ্ছি, নতুন গান করছি। এভাবেই কাটছে সময়। চলতি বছর বেশ কিছু গান প্রকাশ করেছেন। সেগুলোর সাড়া কেমন মিলছে? আসিফ বলেন, দুর্দান্ত সাড়া পাচ্ছি। বছরের শুরুতে ‘ফু’ গানটি থেকে অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। এর বাইরে অন্য যে গানগুলো করেছি সেগুলোর প্রশংসাও শুনছি শ্রোতাদের কাছ থেকে। চলতি এপ্রিলে আঁখি আলমগীরের সঙ্গে করা আমার গান ‘টিপ টিপ বৃষ্টি’ থেকে অনেক সাড়া পাচ্ছি। সব মিলিয়ে আমি গানগুলো নিয়ে সন্তুষ্ট। আমার বিশ্বাস ভালো মানের গান হলে সেটা শ্রোতারা গ্রহণ করবেই। বর্তমানে নতুন গানের ব্যস্ততা কি রকম? উত্তরে আসিফ আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন, এখনতো আমার অনেক গান পাইপলাইনে আছে। অন্তত প্রায় তিন ডজন নতুন গান। এগুলো একে একে প্রকাশ হবে আমার আর্ব এন্টারটেইনমেন্টসহ বিভিন্ন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে। এগুলোর কিছু আবার ভিডিওসহ প্রকাশ হবে। সে কারণে ভিডিওতেও সময় দিতে হচ্ছে। অডিও রেকর্ডিং আর ভিডিও এ দুই মিলে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা এখন বেশ খারাপ। এমনটাই মতামত দিচ্ছে দেশের অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। আপনার কি মত? আসিফ আকবর বলেন, সেটা যদি হতো তাহলে সব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতো। এত বিগ বাজেটের অডিও-ভিডিও করতো না প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। যারা গলা শুকানোর তারা শুকাবেই। এটা নতুন কিছু নয়। তবে অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা যদি এতটাই খারাপ হতো, রিটার্ন যদি না আসতো তাহলে এত অর্থের বিনিময়ে করা কাজগুলো কেন করছে কোম্পানি? এটাই কিন্তু প্রশ্ন! তবে হ্যা, একটা কথা হলো সবার পিছনে কিন্তু বিনিয়োগ হচ্ছে না। যাদের গান থেকে বিনিয়োগটা উঠে আসে তাদের গানই কেবল প্রকাশ হচ্ছে। আমাদের অনেক ভালো সিনিয়র ও জুনিয়র শিল্পী রয়েছেন। তবে কাজের শিল্পীর চাইতে আমাদের বক্তব্যনির্ভর শিল্পীর সংখ্যা বেশি। এখানেই হয়ে গেছে সমস্যা। আমরা সবাই যদি মনযোগ দিয়ে নিজেদের কাজটা করে যেতাম তাহলে এমনটা হতো না। তবে আমি আশাবাদী যে অডিও ইন্ডাস্ট্রি সামনে ভালোর দিকে যাবে। চলচ্চিত্রের গানের কি অবস্থা? নতুন গান কি করছেন? আসিফ উত্তরে বলেন, কাজ করে যাচ্ছি। যারা আমার শর্ত মেনে কাজ করতে ইচ্ছুক তাদের কাজ করছি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই আমাদের সিনেমা অনেকটাই ভারতীয়শিল্পী ও সংগীত পরিচালক নির্ভর হয়ে গেছে। দু-একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভারতীয় শিল্পীদের দিয়ে গান করাচ্ছে। কিন্তু সফলতা কিন্তু শূন্যের কোঠায়। কারণ শেষ পর্যন্ত কিন্তু দেশের শিল্পী-সংগীত পরিচালকদের কাজই বের হয়ে আসছে। ভারতীয় শিল্পীদের গান শ্রোতারা গ্রহণ করছে না। অনেক গানে কলকাতার কিছু শব্দ জুড়ে দেয়া হচ্ছে, যেটা অমাাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মানানসই নয়। কিন্তু জোড় করে সেসব শব্দ জুড়ে দেয়া হচ্ছে। যার ফলে গানগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। না হলে সিনেমার গানের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে।