× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক কাল /৪৫ প্লাটুন বিজিবি রাখার পরিকল্পনা, সেনা মোতায়েন হচ্ছে না

দেশ বিদেশ

সিরাজুস সালেকিন
২৫ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার

সশস্ত্র বাহিনীকে বাদ দিয়েই গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের ছক তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ভোটারদের উপস্থিতি নির্বিঘ্ন করতে ইসি এ দুই সিটিতে পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের পাশাপশি ৪৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাখার পরিকল্পনা করছে। সেক্ষেত্রে গাজীপুরে ২৯ প্লাটুন ও খুলনায় ১৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। এরপরই নিরাপত্তার এ ছক চূড়ান্ত করবে সাংবিধানিক সংস্থাটি। গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সাত দিন আগে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছিল বিএনপি। গত ১৭ই এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপি প্রতিনিধি দল এ দাবি জানায়। এ প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনাও কমিশনের নেই।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির একজন উপ-সচিব বলেন, সেনাবাহিনীকে কোনো সিটি ভোটে মোতায়েন করে নি বর্তমান কমিশন। এবারও আইনশৃঙ্খলার কর্মপরিকল্পনা তাদের রাখা হয় নি। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ সংশ্লিষ্ট নিয়মিত বাহিনী দিয়েই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। বৈঠকের পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হবে বলে উল্লেখ করেন এ কর্মকর্তা। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, ভোটের আগের দুইদিন থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। ওই দুই সিটিতে দলীয় প্রতীকে প্রথম সিটি ভোট হওয়ায় এখানে বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বেশি হারে পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, র?্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে। নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা করতে যাচ্ছে ইসি সচিবালয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে এ আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাসহ রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন-পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এ বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়েই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের ছক চূড়ান্ত করবে ইসি। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় বলা হয়, দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রাখা যেতে পারে। সর্বশেষ কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন ভোটেও একই নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত ছিল। পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স এবং প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের টিম এবং বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের দুই দিন আগে, ভোটের দিন এবং ভোটের পরে একদিন মিলিয়ে চারদিন মাঠে থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র?্যাব-পুলিশের টিম ও বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে সংরক্ষিত রাখার সুপারিশও করেছে ইসি সচিবালয়। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষে প্রচারণা শুরু হলেই প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী হাকিম মাঠে থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামার পর তাদের নেতৃত্বেও থাকবে নির্বাহী হাকিম। এ সময় প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে বিচারিক হাকিমও নিয়োগ করবে ইসি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচন ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ। জাতীয় নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর টার্গেট থাকবে যেকোনো মূল্যে জয়লাভ করা। এতে করে বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে এই দুই সিটির নির্বাচনে। তা ছাড়া সম্প্রতি কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ও সংঘর্ষের ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি। এসব নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছিনতাই, জালভোটসহ নানা অনিয়মের কারণে বেশ কিছু এলাকায় ভোট স্থগিত করতে বাধ্য হয় ইসি। এ পরিস্থিতিতে রংপুর সিটি নির্বাচনে ইসি যে ইমেজ তৈরি করেছিল তা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, আগামী ১৫ই মে গাজীপুর ও খুলনা সিটিতে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন। খুলনা সিটি করপোরেশন গঠিত ৩১টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৪। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মণ্ডলকে এবং খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুস আলীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো আইনি জটিলতা নেই বলে সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর প্রথম ধাপে গাজীপুর ও খুলনার তফসিল দেয়া হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর