× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

যুদ্ধাপরাধ মামলায় এনএসআই’র সাবেক ডিজি গ্রেপ্তার

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৫ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে গুলশানে বারিধারার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানান। এর আগে গতকাল সকালে বিচারপতি মো. আমির হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বলে জানান ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। তিনি বলেন, প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল সকালে  
ওই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরে দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তুরিন আফরোজ জানান, পাকিস্তান আর্মির ২৯ ক্যাভালরির সদস্য হিসেবে ১৯৭১ সালের ২৮শে মার্চ রংপুর ক্যান্টনমেন্টের আশপাশ এলাকায় নিরীহ-নিরস্ত্র বাঙালি ও সাঁওতালদের ওপর হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতন চালিয়েছিলেন আসামি মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হক। পরে ১লা এপ্রিল তিনি পাকিস্তানে ফিরে যান। মানবতাবিরোধী  আর কোন অপরাধের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তুরিন আফরোজ।
পাকিস্তান আর্মির সাবেক সদস্য হিসেবে ওয়াহিদুল হককে বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ৫ই ডিসেম্বর ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তালিকাভুক্ত করা হয়। ওই অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু হয়। তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। তদন্ত কাজকে তিনি বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারেন- এমন উল্লেখ করে তদন্তের স্বার্থেই তাকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়। তুরিন আফরোজ আরো বলেন, একজন যুদ্ধাপরাধী হয়েও কিভাবে তিনি এত গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন সেটি বিশাল গবেষণার বিষয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে তার বারিধারার বাসা থেকে গুলশান থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আগামীকাল সকালে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
মামলার তদন্তের বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান জানান, ১৯৬৬ সালের ১৬ই অক্টোবর মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হক পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১১ ক্যাভালরি রেজিমেন্টে কমিশন পান। পরে তাকে ২৯ ক্যাভালরি রেজিমেন্টে বদলি করা হয়। ১৯৭০ সালের মার্চে ২৯ ক্যাভালরি রেজিমেন্ট রংপুর সেনানিবাসে স্থানান্তরিত হলে ওয়াহিদুল হকও সেখানে চলে আসেন। ১৯৭১ সালের ৩০শে মার্চ পর্যন্ত ওই রেজিমেন্টের অ্যাডজুটেন্ট ছিলেন তিনি। পরে ওই বছরই তিনি বদলি হয়ে আবার পাকিস্তানে (পশ্চিম পাকিস্তান) চলে যান। সেখানে ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করেন তিনি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে দেশে ফেরেন ওয়াহিদুল হক। ১৯৭৬ সালের ১লা অক্টোবর তাকে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৭৭ সালে কুমিল্লার এএসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং ১৯৮২ সালে নোয়াখালী জেলায় পুলিশ সুপারের দায়িত্বও পালন করেন ওয়াহিদুল হক। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এবং ১৯৯১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ওয়াহিদুল হক। পরে তাকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থায় (এনএসআই) নেয়া হয়। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এনএসআই’র পরিচালক এবং পরে এনএসআই’এর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক করা হয় তাকে। এরপর ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ওই দায়িত্ব শেষে ২০০৫ সাল পর্যন্ত পুলিশের অতিরিক্ত আইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর