× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তুরাগ বাসে ধর্ষণচেষ্টা /গ্রেপ্তারকৃত ৩ জন রিমান্ডে

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৫ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার

বাসে যৌন হেনস্তার শিকার উত্তরা ইউনিভার্সির ছাত্রী ঘটনার সময় নিজেকে রক্ষায় চিৎকার করলেও চালক এবং সহকারী তাকে নামতে দেয়নি। গাড়িটি যানজটে আটকা পড়ায় আশপাশের লোকের ভিড় বেড়ে যায়। তখন জোর করে ওই শিক্ষার্থী গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। ঘটনার বিষয়ে তিনি তদন্তকারীদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল আদালতে পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাপস কুমার ওঝা বলেন, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে  আটকরা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এরপর আদালতে হাজির করা হলে মেয়েটির জবানবন্দির পর তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
 

ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীর পারিবাকি সূত্র জানায়, প্রতিদিন বাড্ডা লিংক রোড থেকে বাসে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করেন তিনি। শনিবারও তুরাগ পরিবহনের বাসে উঠেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য। উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া ওই তরুণী বাসে উঠে বেশকিছু যাত্রী দেখেন। বাড্ডা থেকে একের পর এক স্টপিজে যাত্রী নামিয়ে দেয় চালকের সহকারী। নতুন বাজার পর্যন্ত যাওয়ার পর ঘোষণা দেয় বাস আর যাবে না। এ সময় পুরো বাস প্রায় খালি হয়ে যায়। চালক, ভাড়া সংগ্রহকারী ও চালকের সহকারী ছাড়া বাসে আর কেউ নেই। ভয় পেয়ে যান ওই ছাত্রী। খালি বাসে নিরাপত্তাহীনতাও অনুভব করেন। নতুন বাজার অতিক্রম করলে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে হঠাৎ অশোভন আচরণ শুরু করে চালক ও সহকারী। এ সময় ওই ছাত্রী বুঝতে পারেন তার সঙ্গে খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে। তাদের আচরণ দেখে বাস থেকে নেমে যেতে চান তিনি। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে বাস চালাতে থাকে তারা। তখনই ঘটে বিপত্তি। ওই শিক্ষার্থী চিৎকার শুরু করেন। প্রথমে তাতেও কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে বাসের মধ্যে মেয়েটির সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এসে পৌঁছালে অনেকটা জোর করে বাস থেকে লাফ দেন ওই শিক্ষার্থী। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছে স্বামীকে ফোন করেন তিনি। তার স্বামী তখন ব্যবসার কাজে গাজীপুরে ছিলেন। বিকালে বাসায় ফেরার পথে ক্যাম্পাস থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় যান। পরদিনই গুলশান থানায় বাদী হয়ে স্ত্রীকে নিয়ে তুরাগ পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা সড়ক অবরোধ করে টঙ্গী থেকে আসা তুরাগ পরিবহনের বাস আটকে ক্যাম্পাসে নিয়ে রাখেন। অন্যদিকে যাত্রাবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো থেকেও যাত্রী নামিয়ে ক্যাম্পাসে আটক করা হয়। এ আন্দোলন চলে সোমবার বিকাল পর্যন্ত। বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা আল্টিমেটাম দেন মঙ্গলবার ১২টার মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার এবং তাদের শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে আবার আন্দোলন শুরু হবে।

পরে সন্ধ্যায়ই রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে ওই ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগে বাসের চালক রোমান, সহকারী নয়ন এবং ভাড়া সংগ্রহকারী মনিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর গুলশান থানায় নিয়ে আসা হয় তাদের। এদিকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিনজন অপরাধের কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা তাপস কুমার ওঝা। একই সঙ্গে গতকাল  আদালতে নেয়া হলে দশ দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জর করেন।

তাপস কুমার মানবজমিনকে বলেন, ঘটনার পরদিন ২২শে এপ্রিল থানায় মেয়েটির স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেন। আমরা সেদিন থেকেই তৎপর ছিলাম। একই সঙ্গে বাসে ওই ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর