রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ঢাকায় ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে নেমেছিলেন সুপার শপ স্বপ্নের এক কর্মী। ওই সুপারশপে যাওয়া ক্রেতাতের কার্ডের তথ্য নিজের ডিজিটাল ঘড়িতে সংরক্ষণ করে তা নিয়ে কার্ড তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ইতোমধ্যে তিনি কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য মিলেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে কার্ড জালিয়াতির বিস্তর বর্ণনা দেন সি আইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম।
তিনি জানান, এইচএসসি পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য শরিফুল রাশিয়াতে যান। সেখানে এক রাশিয়ান রুমমেটের কাছ থেকে তিনি কার্ড জালিয়াতির প্রক্রিয়া শিখে আসেন। তিনি মূলত ডিজিটাল হাতঘড়িতে একটি ছোট কার্ড রিডার সংযুক্ত করে গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডের সকল তথ্য সংগ্রহ করতেন।
পরে গ্রাহক টাকা পরিশোধকালে পিন নম্বর দেখে রাখতেন। পরবর্তী পদক্ষেপে গ্রাহকের চুরি করা তথ্য দিয়ে ক্লোন কার্ড তৈরি করে নিজের বেশভূষা পরিবর্তন করে পরচুলা এবং কালো চশমা পড়ে তিনি এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিতেন। শরিফুল স্বপ্ন সুপার শপের বনানী শাখায় কর্মরত থেকে এই জালিয়াতির কাজ পরিচালনা করতেন। এ বছরের মার্চ মাস থেকে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইবিএল, ইউসিবিএল, ব্যাংক এশিয়ার কার্ড জালিয়াতির বিষয়টি সিআইডি পর্যবেক্ষণ করছিল। গ্রেপ্তারকালে শরিফুলের বাসা থেকে একটি ল্যাপটপ, ১ হাজার ৪০০টি ক্লোন কার্ড, তথ্য চুরিতে ব্যবহৃত ডিজিটাল হাতঘড়ি, ১৪টি পাসপোর্ট, দুটি মিনি কার্ডরিডার ডিভাইস, একটি পরচুলা, একটি কালো রঙের সানগ্লাস ও আটটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে সিআইডি।
তিনি আরো জানান, শরিফুল মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের ইয়াজউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। এছাড়াও তিনি নিজের চলাচলের জন্য টয়োটা এলিয়ন মডেলের একটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। এর আগে ২০১৩ সালে কার্ড জালিয়াতির মামলায় তিনি ১৮ মাস জেলও খেটেছেন। সিআইডি জানিয়েছে, স্বপ্নের কয়েকজন গ্রাহকের অভিযোগ পাওয়ার পরই শরিফুল লাপাত্তা হন।