× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গাজীপুরে ভোটারদের মন জয়ে প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি

প্রথম পাতা

ইকবাল আহমদ সরকার, গাজীপুর থেকে
২৬ এপ্রিল ২০১৮, বৃহস্পতিবার

গাজীপুরে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা সকাল থেকে দিন-রাত রয়েছেন প্রচারে। মাইকিং, লিফলেট বিতরণ চলছে নগর জুড়ে। পোস্টারে পোস্টারে  ছেয়ে যাচ্ছে সড়ক-মহাসড়ক থেকে মহল্লার অলি-গলি। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা নিজেদের জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে নেমেছেন প্রচারণায়। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ব্যস্ত জনসংযোগে।
কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচারণা চালাচ্ছেন জোরেশোরে। ওয়ার্ডের নতুন-পুরাতন প্রার্থীরা তুলে ধরছেন তাদের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ। ওয়ার্ডগুলোতে উন্নয়নের তেমন ছোঁয়া না লাগলেও বেড়েছে নাগরিক প্রত্যাশা। প্রচারণার মাঠে থাকা প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও মেয়র-কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অনেকটাই সতর্ক ভোটাররা। মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৫ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত ১৪ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় এবং পরে নগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন। আর বিএনপি মনোনীত ২০ দলীয় জোটের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দীন সরকার দিন ভর নগরের গাছা সাংগঠনিক থানায় নির্বাচনী জনসংযোগ ও পথসভা করেন। তারা গণসংযোগে নেমে তুলে ধরছেন নানা প্রতিশ্রুতি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর উন্নত আধুনিক নগর গড়তে তাকে মেয়র হিসাবে নির্বাচিত করতে জনগণের কাছে ভোট চান। বিএনিপর প্রার্থী হাসান উদ্দীন সরকার, নগর উন্নয়নে সরকারের দুঃশাসনের জবাব দিতে তাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও মেয়র পদে লড়ছে সিপিবি, ইসলামী ঐক্যজোট ও ইসলামী ফ্রন্টসহ ৭ মেয়র প্রার্থী। সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীরা কিভাবে স্থানীয়দের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিয়ে যাবেন, তুলে ধরছেন সেসব কথা। প্রত্যাশা পূরণে চাইছেন ভোটারদের সমর্থন।

সকালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নগরের ছয়দানা এলাকার পোশাক কারখানা ও আশপাশে গণসংযোগ করে উন্নয়নের স্বার্থে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরে তিনি মহিলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে, দলমত নির্বিশেষে সবাই নৌকায় ভোট দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জানান, আমি বিজয়ী হয়ে গাজীপুরের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সেই সঙ্গে বেকারত্ব দূর করার জন্য কাজ করে যাবো। এ ছাড়াও সিটি করপোরেশনের ব্যাংক থাকবে। সেখান থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্বল্প সুদে ঋণ নিতে পারবে। এ সময় তিনি বর্তমান মেয়র ও বিএনপির নানা সমালোচনা করে আগামী দিনের জন্য যানজট, জলাবদ্ধতা নিরসন, পরিকল্পিত নগর গঠনে ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। দুপুরের পর তিনি নগরের কোনাবাড়ি, বাইমাউলসহ বিভিন্ন এলাকায় গণ-সংযোগ করেন। গণ-সংযোগকালে ও পথসভায় বিপুল জনসমাগম হয়।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য নগরের গাছা কোনাপাড়া এলাকার আনুমার্কেটে পথসভায় বক্তব্য রেখে ধানের শীষ প্রতীক উঁচিয়ে ধরে ভোট প্রার্থনা করার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন। পরে তিনি বিএনপির গাছা সাংগঠনিক থানা এলাকার রাজ্জাক হাজী বাড়ি মসজিদমাঠ, রশিদ মার্কেট, নতুন বাজার, ইছর প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাথোরা মাদরাসা মাঠ, গাছাবাজার, চান্দরা মাদরাসা, কুনিয়া মির্জা হাশেম স্কুলসহ বিভিন্ন স্থানে পথসভা করে ধানের শীষকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। সবশেষে এলাকার আয়েত আলী স্কুল মাঠে পথসভার মধ্য দিয়ে পথ সভার শেষ করেন। প্রচারের সময়  নগরবাসীর মন জয়ে দেন নানা প্রতিশ্রুতি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। বিশ দল সমর্থিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান সরকার জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করবো। যদি তা না হয়, এখান থেকে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছি, ঠিক তেমনিভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনও এখান থেকে শুরু করবো।এসব কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, দলের নির্বাহী সদস্য ডা. মাজহারুল আলম, জেলা নেতা শওকত হোসেন সরকার ছাড়াও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। ইসলামি ঐক্য জোটের প্রার্থী মিনার প্রতীক নিয়ে দিনভর এবং ইসলমি ফ্রন্টের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন মোমবাতি প্রতীক নিয়ে নগরের জয়দেবপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। তাদের সঙ্গে থাকা দলীয় কর্মীরা এ সময় প্রতীক সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তারাও জয়ের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন।

আর ভোটাররা এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ে করছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। ভোটাররা বলছেন, আমরা এমন নেতৃত্বই চাই, যারা উন্নয়নের প্রত্যাশা কেবল প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবে না।

আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় এই সিটির নির্বাচনে ৭ জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ২৫৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন নির্বাচনী মাঠে। একটি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এখন এই সিটির ৫৬টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে  নির্বাচন হচ্ছে। এবারের ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬। এতে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। আগামী ১৫ই মে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হবে এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর