× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খালেকের ৩১ দফা, মঞ্জুর পক্ষে প্রচারণায় গয়েশ্বর

প্রথম পাতা

রাশেদুল ইসলাম, খুলনা থেকে
২৬ এপ্রিল ২০১৮, বৃহস্পতিবার

একদিনেই জমজমাট ভোটের মাঠ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। ভোটারদের মন জয়ে নানা কসরত। প্রতীক পাওয়ার পরদিন গতকাল আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ৩১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার
ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে বিএনপি মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর পক্ষে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। খালেকের ৩১ দফায় জলাবদ্ধতামুক্ত আধুনিক পরিচ্ছন্ন নগর গড়া এবং সর্বাধিক নাগরিক সুবিধা ও সেবাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন।

তালুকদার আবদুল খালেক বলেন,, কেসিসির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হলেও নির্বাচিত হয়ে তিনি সিটি গভর্নমেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চান। তাহলে কেসিসি ও ওয়াসাসহ নগরীর উন্নয়নে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘ইজিবাইকে চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে।
সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধসহ মাদক নির্মূলে তিনি ভূমিকা পালন করবেন। পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর সহযোগিতা পেলে এ শহর থেকে ৬ মাসের মধ্যে মাদক নির্মূল করা সম্ভব।’
তালুকদার আবদুল খালেক ঘোষিত ইশতেহারের ৩১ দফা হচ্ছে- সিটি গভর্নমেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণে পরামর্শক কমিটি গঠন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবা বৃদ্ধি, কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, নতুন আয়ের উৎস সৃষ্টি, সিটি সেন্টার গড়ে তোলা, বিনামূল্যে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি, গুরুত্ব বিবেচনা করে সড়ক উন্নয়ন, পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ণ সৃষ্টি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটানো, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে রাস্তার নামকরণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্রীড়া উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ, সোলার পার্ক আধুনিকায়ন, বধ্যভূমিগুলোর স্মৃতি সংরক্ষণ, কেসিসিকে দুর্নীতিমুক্ত করা, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা প্রদান, সুইমিং পুল স্থাপন, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সহায়তা প্রদান, সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনে আরো উদ্যোগ গ্রহণ, তিনটি নতুন থানা পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা, আধুনিক কশাইখানা নির্মাণ, খালিশপুর ও রূপসা শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন, ওয়াসা, কেডিএ, রেলওয়ে, টেলিকমিউনিকেশন ও বিদ্যুৎ পরিসেবার উন্নয়ন এবং খুলনা মহানগরী সমপ্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ।

এ সময় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী শেখ হারুনুর রশীদ, সমন্বয়কারী ও কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক কাজি আমিনুল হক, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শেখ সোহেল, মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মকবুল হোসেন মিন্টু, সাবেক এমপি সোহরাব আলী সানাসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ওদিকে খুলনাবাসীর কাছে ধানের শীষে ভোট চাইলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ সময় তিনি বলেন, ভোটে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটবে না। কিন্তু দেশমাতাকে কারামুক্ত করতে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এবং মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে দেশের দুই সিটিতে বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নগরীর সিটি কলেজ মোড় থেকে গণসংযোগ শুরু করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব। তারা সিটি কলেজ, রয়্যাল মোড়, সাত রাস্তার মোড়, ২১নং ওয়ার্ডের গ্রিনল্যান্ড বস্তি এবং পরে আইনজীবী সমিতিতে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন।

তার সঙ্গে ছিলেন ২০ দলীয় জোট নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা, সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, বিজেপি সভাপতি অ্যাডভোকেট লতিফুল রহমান লাবু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম রবি, শফিকুল আলম তুহিন, মাহববু হাসান পিয়ারু, আকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর প্রার্থী মোল্লা ফরিদ আহমেদ, একরামুল হক হেলাল, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আজিজা খানম এলিজা,  হেলাল আহমেদ সুমন, আবদুর রাজ্জাক, আল জামাল ভূইয়া প্রমুখ।

বিকেলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ২৪ ও ২৭নং ওয়ার্ড এলাকার তিনটি মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ধানের শীষের পক্ষে ভোট চান। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ২৪নং ওয়ার্ডের শমসের আলী মিন্টু (ঘুড়ি) এবং ২৭নং ওয়ার্ডের হাসান মেহেদী রিজভী (ঝুড়ি) উপস্থিত ছিলেন।

সরজমিন দেখা যায়, প্রতীক হাতে পেয়েই প্রচারণার মাঠে নেমে পড়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়েই শুরু হয়েছে পোস্টার ও লিফলেট বিতরণের কাজ। চলছে নগরজুড়ে মাইকিং। বড় মির্জাপুর রোডের বাসিন্দা লাভলু বলেন, পুরো খুলনাজুড়ে যেন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ভোটারদের বাড়ি, পাড়া-মহল্লায় প্রার্থী ও সমর্থকদের পদচারণায় হঠাৎ করেই বদলে গেছে পরিবেশ। সবাই আগ্রহ নিয়েই নির্বাচনী আলোচনায় যোগ দিচ্ছেন।

এদিকে প্রথম দিনের প্রচার-প্রচারণায় বাড়তি উৎসাহ দেখা যায়, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে। নির্বাচন কার্যালয়ের নিচে বিক্রেতাদের নানা রঙের প্রতীক-ব্যানারের পসরা থেকে তারা নিজেদের প্রতীক কিনে নেয়। তারপর সেখান থেকেই শুরু হয় মিছিল-স্লোগান। ১৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম পান্না বলেন, এবার নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। ভোটাররা এখন অনেক বেশি সচেতন। প্রতীক বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গে প্রচারণা শুরু হয়েছে ফেসবুকেও। আমরা যে তথ্য প্রযুক্তিতেও এগিয়ে যাচ্ছি- সেটা আজ প্রমাণিত।

কেসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচারণা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ: খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার করপোরেশনের সচিব মো. ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এ আদেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার: শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠন পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এফএম জাহিদ হাসান জাকিরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর