মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরতলীর ইছবপুর গ্রামের সবজি ক্ষেতের জালে বনের বিপন্ন প্রাণী একটি বনরুই আটকা পড়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় শিমুল নামের এক শিক্ষার্থী প্রতিদিনের মতো ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে বের হন। হাঁটতে হাঁটতে চলে যান খেতের দিকে। সবজিখেতে জালের কাছে গিয়ে দেখতে পান, কি যেন জালে আটকে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান,বুধবার রাতে বেশ ঝড়বৃষ্টি হয় ইছবপুর গ্রামে। এর কারণেই খেতের জালে আটকে যায় বনরুইটি। এতে আহতও হয় বিপন্ন এই প্রাণী। শিমুল সেটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান।
সেখানে তার পরিচর্যা করেন। এ খবর জেনে শ্রীমঙ্গলের বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব শিমুলের বাড়ীতে গিয়ে বিপন্ন এই প্রাণীটিকে নিয়ে আসেন ফাউন্ডেশনে। এখানে বিপন্ন বন্য প্রাণী সংরক্ষণ করা হয়।
সজল দেব বলেন, ‘বনরুইয়ের মাংসকে লোকজন বিভিন্ন রোগের পথ্য বলে মনে করেন। তাই এক শ্রেনীর লোক এটিকে সাবাড় করে ফেলছে। তাই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। এলাকাবাসী আমাদের হাতে বনরুইটি তুলে দেন।’
সজল দেব আরও বলেন, বনরুইটির পেছনের পা দুটিতে সামান্য সমস্যা হয়েছে। চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলে শিগগিরই আবার লাউয়াছড়া বনে ছেড়ে দেয়া হবে।
বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, বনরুই বর্তমানে খুবই বিরল প্রজাতির। এটি একধরনের স্তন্যপায়ী সরীসৃপ বন্য প্রাণী। ইংরেজিতে বন্য প্রাণীটিকে চায়নিজ পেনগলিন বলা হয়।
সিতেশ দেব জানান, রুই মাছের মতো সারা শরীরে আঁশ থাকায় এটি ‘বনরুই’ নামে পরিচিত। বনরুই গহিন বনে ১০-১৫ ফুট গভীর সুড়ঙ্গ করে বসবাস করে। এরা নিশাচর ও লাজুক প্রকৃতির। গভীর রাতে খাবারের খোঁজে সুড়ঙ্গ থেকে বাইরে বেরোয়। আবার ভোরের আগেই সুড়ঙ্গে ঢুকে যায়। পিঁপড়া, পিঁপড়ার ডিম ও উইপোকা বনরুইয়ের প্রধান খাদ্য। বনরুই বছরে একবার বাচ্চা দেয়। এর পায়ের নখ ও পাতা খুবই শক্তিশালী। এরা রাতে দ্রুত চলাচল করতে পারে।