গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের নিভৃত পল্লীতে জ্বীনের বাদশা প্রতারক চক্রের সদস্যের কাছে গণধর্ষনের শিকার হয়েছে মা ও মেয়ে। গণধর্ষনের ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার কাটাখালী নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে । এঘটনায় জড়িত সাদা মিয়া নামের এক কথিত জ্বীনের বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় জ্বীনের বাদশা নামের সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র অপকর্ম চালিয়ে আসছে। অসংখ্য মানুষ এই চক্রের কাছে তাদের সহায় সম্বল হাড়িয়ে পথে বসেছে। অনেক নারীকে কৌশলে ডেকে এনে গণধর্ষণের মতো ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। হত্যাও করা হয়েছে একাধিক নারীকে । গোবিন্দগঞ্জসহ কয়েকটি থানায় জ্বীনের বাদশা প্রতারকদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
কিন্তু কোনো প্রতিকার মেলেনি। ফলে একের পর এক হত্যা ধর্ষণ চলেই আসছে। এই চক্রের হাতে এবার গণ ধর্ষনের শিকার হয়েছে মা ও মেয়ে।
জ্বীনের বাদশা চক্রের সদস্যরা প্রথমে বিভিন্ন এলাকায় দিনমজুর হিসাবে কাজ করতে যায়। তারপর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গৃহস্থের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তারপর শুরু হয় তাদের অপকৌশল । সরলতার সুযোগ নিয়ে জ্বীনের বাদশা তাদের নানা রকম প্রলোভন দেখায় এবং তাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান ।
পুলিশ আরো জানায়, দীর্ঘদিন ধরে গোবিন্দগঞ্জের এই প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষের মোবাইল ফোনে গভীর রাতে ফোন দিয়ে ধর্মীয় কথাবার্তা বলে তাদের দুর্বল করে এবং গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। একই কৌশলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা তাদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে 'জিনের বাদশা' পরিচয় দিয়ে কৌশলে তাদের কাছ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
গত শুক্রবার গুপ্তধন পাইয়ে প্রলোভন দেখিয়ে জামালপুর থেকে মা ও মেয়েকে ডেকে আনে জ্বীনের বাদশা সাদা মিয়াসহ প্রতারক চক্র। গুপ্তধন পাওয়ার আশায় ওই মা ও মেয়ে চলে আসে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে । গভীর রাতে গোবিন্দগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে থাকেন তারা। তারপর জ্বীনের বাদশা প্রতারক চক্রের সদস্যরা তাদেরকে মটরসাইকেলে করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী নদীর নির্জন বালুচরে নিয়ে যায়। শুক্রবার রাতভর তাদের গণধর্ষণ করা হয়।
প্রতারকরা সেখানে মা-মেয়েকে রাতভর ধর্ষণেরর পর তাদের ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর গতকাল শনিবার সকালে মা-মেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় আশ্রয় নেন। গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মেয়েটির মা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের খুজে বের করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।