কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ও কুমিল্লা সরকারি কলেজের ছাত্রদের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ৩টি গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ বিকালে নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন কুবি’র শিক্ষার্থীরা। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, দোকান ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের পক্ষ থেকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়াসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে উত্তেজিত কুবির শিক্ষার্থীরা পুলিশ লাইন এলাকায় প্রায় ১ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে। এসময় ওই এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস যোগে ফেরার পথে রবিবার বিকাল ৬টার দিকে নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় আসার পর কুমিল্লা সরকারি কলেজের ছাত্রদের সাথে বাকবিত-া হয়। একপর্যায়ে কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা কুবির শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসে ভাঙচুর শুরু করে। এসময় ওই গাড়িতে থাকা শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ে। এ ঘটনার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুটি গাড়ি নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কুমিল্লা সরকারি কলেজের ছাত্রদের ধাওয়া করে। এসময় কলেজের প্রধান ফটকের দুটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। এসময় পুলিশ লাইন এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে এবং সকল দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাকাগুলি ছুড়ে। সংঘর্ষে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়াসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল অভি, জনিসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা ক্লাস শেষে নগরীতে ফিরছিলাম। এসময় কোটা সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের কোন কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু কোটাবিরোধী আন্দোলনে আমরা সমবেত হচ্ছি এমন সন্দেহে আমাদের গাড়িতে অতর্কিত হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়। কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত কোটা সংক্রান্ত বিষয়ে কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নগরীতে সমবেত হচ্ছিল। বিষয়টি অবগত হয়ে আমরা নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িটি পুলিশ লাইন এলাকায় প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের উপর চড়াও হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, হামলার কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে উভয়পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ভাঙচুরকৃত গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ লাইনের ভেতর রাখা হয়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী জানান, ঘটনার বিষয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে। কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। সোমবার ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জরুরি সভা আহবান করা হয়েছে।