বিএনপি চেয়ারম্যান কারাবন্দি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের প্রথিতযশা ১৩০১ চিকিৎসক। সেই সঙ্গে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন তারা। বিবৃতিতে তারা বলেন, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে আমরা চিকিৎসক সমাজসহ দেশের ১৬ কোটি জনগন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ। প্রতিরাতে কাঁপুনি দিয়ে তার জ্বর আসে। তার কাশি ও জ্বর নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
ডান চোখ লাল হয়ে ফুলে গেছে। সার্ভভাইকাল স্পনডাইলোসিস রোগের ভয়াবহতার কারণে বাম হাত ধীরে ধীরে অবস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কোমরের সমস্যার কারণে তাঁর শরীরের বাম পাশ ও বাম পায়ের তীব্র ব্যথা ধীরে ধীরে নীচের দিকে নামছে।
তিনি হাঁটা চলাও করতে পারছেন না। চিকিৎসকরা বলেন, খালেদা জিয়াকে জরাজীর্ন, স্যাঁতসেতে পরিত্যক্ত, নির্জন কারাগারে বন্দি করে রেখেছে বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ সরকার। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য তাকে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। চিকিৎসকরা বলেন, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ জটিল নানা রোগে আক্রান্ত। ইতোপূর্বে তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
সম্প্রতি তিনি লন্ডনে চোখের অপারেশনও সম্পন্ন করেছেন। তিনি কোন সাধারণ রোগী নন। চিকিৎসকদের পরিভাষায় তিনি একজন বিশেষ পরিচর্যা সাপেক্ষ রোগী। সে হিসেবে তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত পরিচর্যার সকল সুবিধা নিশ্চিত করা সকল সভ্য গণতান্ত্রিক ও মানবিকতাবোধসম্পন্ন জাতির কর্তব্য। বিবৃতিতে চিকিৎসকরা বলেন, জনসাধারনের মধ্যে এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, খালেদা জিয়ার মত একজন জনপ্রিয় ও গণতন্ত্রের মাতৃসম ব্যক্তিত্বের এইরূপ সুচিকিৎসা বঞ্চিত করার প্রচেষ্টা তাঁর বিরুদ্ধে চলমান ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও সাজা দেয়া এবং নির্জন, পরিত্যাক্ত কারাগারে নিয়ে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন নিপিড়ন, অপদস্থ ও হীন সাব্যস্ত করার ব্যাপক চক্রান্তের অংশ বিশেষ। সাধারণ মানুষ, জেষ্ঠ্য নাগরিক, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী, দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, নর-নারী নির্বিশেষে এই চলমান ঘটনাবলিতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। সেই সঙ্গে এই হীন চক্রান্তের অবসান ঘটানোর জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
চিকিৎসকরা বলেন, খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীই নন তিনি স্বাধীনতার ঘোষক ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহধর্মীনি। তিনি রাষ্ট্রের একজন সিনিয়র সিটিজেন। আমরা চিকিৎসক সমাজ ১৬ কোটি জনগনের প্রাণের নেত্রীর অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। সুচিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকারকেই গ্রহন করতে হবে।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- প্রফেসর ডা. মবিন খান, প্রফেসর ডা. বায়েছ ভূঁইয়া, প্রফেসর ডা. সিরাজউদ্দিন আহমদ, প্রফেসর ডা. আবদুল মান্নান মিয়া, প্রফেসর ডা. মিজানুর রহমান, প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস, প্রফেসর ডা. মতিউর রহমান মোল্লা, প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. এএসএমএ রায়হান, প্রফেসর ডা. ফিরোজা বেগম, প্রফেসর ডা. মো. সাইফুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. খাদিজা বেগম, প্রফেসর ডা. এ কে এম ফজলুল হক, প্রফেসর ডা. এ কে এম আজিজুল হক, প্রফেসর ডা. শাহাবুদ্দিন, প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস, প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, প্রফেসর ডা. রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. সাইফুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. মঈনুল হাসান সাদিক, প্রফেসর ডা. আজিজ রহিম, প্রফেসর ডা. রফিকুল কবির, প্রফেসর ডা. হারুন অর রশিদ, প্রফেসর ডা. আবদুস সালাম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, প্রফেসর ডা. শামিমুর রহমান, প্রফেসর ডা. গোলাম মঈনউদ্দিন, প্রফেসর ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, প্রফেসর ডা. সেলিনা খানম, প্রফেসর ডা. মনির হোসেন, প্রফেসর ডা. তসলিম উদ্দিন, প্রফেসর ডা. সেলিমুজ্জামান, প্রফেসর ডা. চৌধুরী মো. হায়দার আলী সহ ১৩০১জন চিকিৎসক।