চট্টগ্রাম মহানগরের নিন্মাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সকালে মাত্র ১৫ মিনিটের বৃষ্টিপাতে এই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। তবে বৃষ্টির পানির সঙ্গে যোগ হয়েছে জোয়ারের পানি। ফলে অফিসগামী, কর্মজীবী, সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আব্দুর হান্নান জানান, কালবৈশাখীর প্রভাবে সকাল পৌনে নয়টা থেকে নগরের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জোয়ার শুরু হয়েছিলো। ফলে চট্টগ্রাম মহানগরে নিচু এলাকা পানিতে ডুবে যায়।
তিনি বলেন, দুপুর ১টার পর থেকে ভাটা নামতে শুরু করে। তবে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় জলাবদ্ধতা কমছে না।
বিকেলের পর রাতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কিছু কিছু জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতও হতে পারে।
জানা যায়, সকালের বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে নগরের নিম্মাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি এক সঙ্গে ওঠায় নগরের নিম্মাঞ্চলের সড়ক ও অলিগলিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
বিশেষ করে চট্টগ্রাম মহানগরের বাকলিয়া, চকবাজার, বাদুরতলা, মুরাদপুর, চাকতাই, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ অধিকাংশ নিন্মাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। অনেকের বাসা, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল ও অফিসগামী লোকজন।
বাকলিয়া এলাকার মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, রাতে বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিলো। সকাল পৌনে ৯টার দিকে বৃষ্টিপাত হতে থাকে। একদিকে জোয়ারের পানি আর অন্যদিকে বৃষ্টিপাত। জোয়ার আসলেই বাকলিয়া এলাকায় পানি ওঠে যায়। সকালে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানি আরও বেড়ে গেলো।
বাদুরতলা এলাকার সোহানুর রহমান জানান, শুধু বৃষ্টি নয় দিনের বেলায় জোয়ার আসলেও বাদুরতলা এলাকায় পানি ওঠে। অন্যান্য এলাকায় নালা পরিষ্কার করলেও এবার বাদুরতলা এলাকায় পরিষ্কার করা হয়নি। সকাল থেকেই রাস্তায় হাঁটু সমান পানি উঠেছে। এলাকার স্কুল ও অফিসগামী লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
তিনি বলেন, এখনো পুরোপুরি বর্ষা মৌসুম শুরু হয়নি। কিন্তু এখন থেকেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ শুরু হয়ে গেছে। সামনে জলাবদ্ধতা নিয়ে আরও কত যে কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হবে, তা বুঝতে পারছি না।
নগরবাসীর অভিযোগ, জলাবদ্ধতা নিরসন নিয়ে সিটি কর্পোরেশন এবং সিডিএর রশি টানাটানির খেসারত দিতে হবে এবার নগরবাসীকে। সামান্য সময়ের বর্ষণে যদি এমন জলাবদ্ধতা হয়, তাহলে বর্ষার ভারী বর্ষণে নগরের কী অবস্থা হয় তা এখনই ধারণা করা যায়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বলেন, সিটি কর্পোরেশন বর্ষা মৌসুমে নালা নর্দমা পরিস্কারসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে বৃষ্টি হলেও পানি দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়নি। তবে যেখানে জলাবদ্ধতা হয়েছে সেখানে জোয়ারের পানি ঢুকেছে।