× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রোজা এলেই সক্রিয় সিন্ডিকেট

এক্সক্লুসিভ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৭ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার

রমজান এলেই সক্রিয় হয়ে ওঠে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। অন্যদিকে পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়েও শঙ্কায় থাকেন ক্রেতারা। এ মাসটি সামনে রেখে বিশেষ করে ছয়টি পণ্য টার্গেট করে সক্রিয় হয়ে উঠে ভোগ্যপণ্যের এই চক্রটি। এ ছাড়া বৃষ্টি ও বিভিন্ন মহলের চাঁদাবাজির কারণে পিয়াজ-চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোক্তাদের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজানের আগেই অতিরিক্ত মুনাফা তুলে নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে- সরকারের এমন হুঁশিয়ারির মুখে ব্যবসায়ীরা আগেই ধাপে ধাপে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
রমজানকে সামনে রেখে একচেটিয়া ব্যবসা করতে ছোলা, চিনি, পিয়াজ, ডাল, খেজুর ও ভোজ্য তেল পর্যাপ্ত পরিমাণ আমদানি করেছে ব্যবসায়ীরা। এরপর এসব পণ্য গুদামজাত করে বাজার অস্থির করছে এই সিন্ডিকেট।
ইতিমধ্যেই রাজধানীর বাজারে রোজার আঁচ লেগেছে। সব পণ্যের দাম প্রায় ঊর্ধ্বমুখী।
ওদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এবার রমজানে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। চিনি, খেজুর, ডালসহ ভোগ্যপণ্য যা যা চাহিদা, তার চেয়ে বেশি মজুদ রয়েছে। সেবার মনোভাব নিয়ে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার পরামর্শ দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, রমজান মাসে ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল হতে হবে। এদিকে রমজানকে সামনে রেখে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজ আমদানি বেড়েছে। আমদানির সঙ্গে বেড়ে চলেছে পণ্যটির দামও। আমদানি পর্যায়ে যে দাম নেয়া হচ্ছে, রাজধানীতে এসে তা হয়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ।
জানা গেছে, হিলি স্থলবন্দরে আমদানি পিয়াজ প্রকারভেদে এখন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৪ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ১৬ থেকে ২০ টাকা। সে হিসেবে আমদানি মূল্য বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা। আমদানিকারকরা বলছেন, সমপ্রতি বর্ষার কারণে ভারতের পিয়াজের বাজারে কিছুটা দাম বেড়েছে।
কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছেন এবার মজুদ পর্যাপ্ত আছে। দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। তাহলে হঠাৎ করে চিনি, পিয়াজের দাম কেন বাড়ছে। এর মূল কারণ সিন্ডিকেট। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারকে অস্থির করছে। এদিকে প্রতি বছর রমজানের আগে নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী হওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের চেয়ে ভোক্তারাই বেশি দায়ী বলে মনে করেন বিক্রেতা ও বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, রমজানে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পণ্য কেনায় বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়। যার সুযোগ নেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। তাই ক্যাব সভাপতি বলছেন, রমজানে পণ্য কেনার ব্যাপারে ক্রেতাদের আরো সহনশীল হওয়া জরুরি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পিয়াজ বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দেশি পিয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আর আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। এদিকে টিসিবি’র তথ্য মতে, পিয়াজের দাম কমেছে। সংস্থাটির তথ্য মতে, দেশি পিয়াজ প্রতিকেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। এদিকে গত কিছুদিন আগে বাড়া চিনির এখনও বাড়তিতেই আছে। ৫ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। অথচ সারা বছর চিনি বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৫ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শবেবরাত ও রোজা সামনে রেখে এসব জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। টিসিবি হিসাবে বর্তমানে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে চিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথ্যমতে, রমজানে ভোজ্য তেলের চাহিদা থাকে ২.৫ লাখ টন, চিনি ৩ লাখ টন, ছোলা ৮০ হাজার টন, খেজুর ১৮ হাজার টন এবং পিয়াজ ৪ লাখ টন। এর বিপরীতে প্রতিটি পণ্যই কয়েকগুণ বেশি ইতিমধ্যে আমদানি করে মজুদ করা হয়েছে।
অন্যদিকে গতবারের চেয়ে এবার মসুর ডালের দাম ২১.৪৩ শতাংশ, ছোলা ১৪.২৯ শতাংশ, রসুন (আমদানি) ৪৫.৫ শতাংশ, রসুন (দেশি) ৩৯ শতাংশ, চিনির দাম ১৬ শতাংশ কমেছে। তবে পিয়াজের দাম যেভাবে বেড়েছিল তার থেকে এখন সহনীয় পর্যায়ে আছে। পিয়াজের যে চাহিদা দেশীয় উৎপাদন থেকে তা পূরণ হয় না। তাই ভারত থেকে পিয়াজ আনতে হয়। এতে সময় বেশি লাগলে পিয়াজ পচে যায়, নষ্ট হয়। বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমে যাওয়ায় রমজানে এবার এর দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করে মন্ত্রণালয়।
ঢাকার মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ হাজী মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বলেন, রোজায় কারসাজি না হলে ভোজ্য তেল ও চিনির দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে রোজা এলেই মিল মালিকরা মিলগুলো সংস্কারের নামে চিনি সরবরাহ বন্ধ করে দেন। প্রতিবছর তাই হয়ে আসছে। সংস্কারের নামে যাতে মিলগুলো বন্ধ রাখা না হয় সে ব্যাপারে সরকারি পর্যায়ে মনিটরিং করা প্রয়োজন। প্রতিবছর মিল সংস্কারের নামে সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়ানো হয়। আর এর খেসারত দিতে হয় সাধারণ ভোক্তাদের।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর