পশ্চিমবঙ্গে ত্রি স্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের আধিপত্য বহাল রয়েছে। তিন স্তরেই শাসক দল ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ আসনে জয়ী হওয়ার পথে। বিরোধীরা তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে অনেক পিছিয়ে থাকলেও বাম ও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে বিজেপি স্থানে উঠে এসেছে। এমনকি জঙ্গল মহল বলে পরিচিত এলাকায় বিজেপি তাদের আধিপত্যের প্রমাণ দিয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জনজাতি অধ্যূষিত এলাকাতে বিজেপি তাদের প্রভাব বিপুলভাবে প্রতিফলিত করতে পেরেছে। রাজ্যে এই নবম পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথম বিরোধীদের হাতে একটিও জেলা পরিষদ নেই। গত বারের ভোটে বিরোধীদের জেতা তিনটি জেলা পরিষদও চলে গিয়েছে শাসকের হাতে। গত ১৪ মে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ৩৮ ৫৪৬ টি আসনে নির্বাচন হয়েছে।
তবে বিরোধীরা ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ করার পরিপ্রেক্ষিতে পরে ৫৭৩টি বুথে পুন:নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সকালে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের ছবিটি স্পষ্ট হযেছে। দুপুরের পর পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, শাসক দল গ্রামবাংলা জুড়ে তাদের একাধিপত্য কায়েক করেছে। তবে সোমবার ৬৬ শতাংশ আসনে নির্বাচন হযেছে। বাকী ৩৪ শতাংশ আসনে শাসক দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। তবে সেই সব প্রার্থীদের ভাগ্য আদালতের হাতে ঝুলে রয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩১৮০২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১৬১৬৬টি আসনে জয়ী হয়েছে বা জয়ের পথে রয়েছে। বিজেপি জয়ী হয়েছে ৪০২০টি আসনে বা জয়ের পথে। বামরা জয়ী হয়েছে ১০৪২টি আসনে। কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১০টি আসন। আশ্চর্যজনকভাবে ১২৮৪ জন নির্দল প্রার্থী এবারের নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই নির্দলদের অধিকাংশ শাসক দলের বিক্ষুদ্ধ অংশ। গোষ্ঠী বিরোধের কারণেই এরা প্রার্থী হয়ে ছিলেন। পঞ্চায়েত সমিতিতেও তৃণমূল কংগ্রেস একাধিপত্য কায়েম করতে চলেছে। এদিন অবশ্য গণনাতেও ব্যাপক গোলমাল হয়েছে। অনেক জায়গাতেই বিরোধী এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কোথাও কোথাও তাদের মেরে বার করে দেওয়া হয়েছে। নদীয়ার মাজদিয়ায় একটি গণনা কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে ছাপ্পা ভোট দিতে দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশন অবশ্য সংশ্লিষ্ট ২টি বুথের গণনা স্থগিত করে দিয়েছে। অন্য দিকে কোচবিহারে দুটি ব্যালট বাক্স থেকে ভোটারের চেয়ে বেশি ব্যালট পেপার পাওয়া গিয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানা গেছে।