× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাতছড়িতে পর্যটক টানতে ট্রি এডভেন্সার

এক্সক্লুসিভ

রাজীব দেব রায় রাজু, মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে
২৪ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার

আমরা প্রকৃতিকে বাঁচাবো আগামী প্রজন্মের জন্য এই স্ল্লোগানকে ধারণ করে ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২০০৫ সালে ২৪৩ হেক্টর বনভূমিকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। তখন এ বনটি বিভিন্নভাবে ধ্বংস হতে চলছিল। এ বনটির জীববৈচিত্র্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বনের মধ্যে ২১ প্রজাতির উভয়চর প্রাণী, ৫০ প্রজাতির সরীসৃপ, ২০৩ প্রজাতির পাখি এবং ২৪ প্রজাতির স্তন্যপ্রায়ী প্রাণী ছিল। ২০০৫ সাল থেকে হবিগঞ্জের মাধবপুর-চুনারুঘাট বন এলাকার ৩৮টি গ্রামের জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠী নিয়ে সহব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। বন বিভাগ সহব্যবস্থাপনা কমিটি, উদ্যান সহব্যবস্থাপনা কমিটির যৌথ ব্যবস্থাপনায় সাতছড়ি বনের জীববৈচিত্র্য, গাছপালা এবং বণ্যপ্রাণীর অভয়াশ্রমে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। পর্যটকদের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে নানা উদ্যোগ। এর মধ্যে রয়েছে দর্শনার্থী তথ্য কেন্দ্র, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, উদ্ভিদ গবেষণা কেন্দ্র, ছাত্র-শিক্ষকদের ডরমেটরি, ট্রি এডভেন্সার সেন্টার।
সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন বলেন, এ বনে অবাধে সর্ব সাধারণের প্রবেশ সংরক্ষিত হওয়ায় এবং বনের ভিতরে বসবাসকারী পশু-পাখি নিরাপত্তা ও খাদ্যের সংস্থান থাকায় এখন সাতছড়ি বনে বিভিন্ন বণ্যপ্রাণীর প্রজনন বৃদ্ধি পেয়েছে। স্তন্যপ্রাণী প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে বন্য শূকর, উল্লুক, মুখপোড়া হনুমান, চশমাপড়া হনুমান, কুলু বানর, লজ্জাবতি বানর, কাঠ বিড়ালি, খরগোশ, ডাইনি বাদর, বন বিড়াল, মেচু বিড়াল, গন্ধগোকুল, হলদে গলা মারটিন, মায়া হরিণ। উভয়চর প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে সোনা ব্যাঙ্গ, কোনা ব্যাঙ্গ, বেনপু ব্যাঙ্গ, লালপিঠ লাউবিচি ব্যাঙ্গ, মুরগি ডাকা ব্যাঙ্গ। সরীসৃপ প্রাণীর মধ্যে রয়েছে উড়ন্ত টিকটিকি, নীলগলা গিরগিটি, তক্ষক, কিং  কোবরা, গোখরা সাপ, সবুজ বোরা সাপ, দোড়া সাপ, লাউডগা সাপ, পাহাড়ি সাপ। পাখির মধ্যে রয়েছে কাউ ধনেশ, পাতি ময়না, লালমাথা কুচকুচি, উদয়ী বামনরাঙ্গা, মেটে হাঁড়িচাচা, খয়রামাথা শুমচা, তুর্কীবাজ, সবুজ ঘুঘু, সবুজ ধুমকল, চিত্রা হুতোম প্যাঁচা, তামাটে বেনেবউ, পাতি সবুজ তাউরা, নীলচুটকি, কালাগলা টুনটুনি, কালাঝুটি বুলবুল, জলপাই বুলবুল, এশিয় শ্যামাপাপিয়া ।
সাতছড়ি টিপড়া বস্তির হেডম্যান চিত্তরঞ্জন বর্মন জানান, এক সময় মনুষ্যসৃষ্ট তাণ্ডবে বনভূমি ক্ষতবিক্ষত ছিল। এ কারণে জীববৈচিত্র্য ও দুর্লভ অনেক বণ্যপ্রাণী বিলুপ্ত হতে যাচ্ছিল। এখন সাতছড়ি বনকে অভয়াশ্রম ও জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করায় পাহাড়ে বৃক্ষরাজি বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেক বণ্যপ্রাণী ও  পাখি, সরীসৃপ প্রাণী  বৃদ্ধি পেয়েছে।
মাঝে মাঝে বনের পশু, পাখিগুলোকে রাস্তায় চলে আসতে দেখা যায়। অনেক দর্শনার্থী এগুলো দেখে আনন্দ পেয়ে থাকেন।
প্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন গাড়ি নিয়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যোনে ছুটে আসেন। বিশেষ করে জাতীয় দিবসগুলোতে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যোনে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। গত বছর সাতছড়ি জাতীয় উদ্যোনে প্রবেশের টিকিট বিক্রি করে ১২ লাখ টাকা আয় করা হয়। এ বছর প্রায় ১৫ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।  
রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, বণ্যপ্রাণীর খাবারের সংস্থানের জন্য ৪টি ফল বাগান করা হয়েছে। এ সব বাগান থেকে এখন পশু পাখি খাবার সংগ্রহ করে। এ বছরও ২৩০ হেক্টর জায়গায় ফল বাগান করা হবে। এছাড়া খরা মৌসুমে পশু পাখির পানি সংকট দেখা দেয়। এ সংকট মোকাবেলায় বনের ভিতরে জলাধার সৃষ্টি করা হয়েছে।
বণ্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ তানিয়া খান জানান, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে সাতছড়ি বনে গাছকাটা বন্ধ  এবং বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণের কারণে এখন  সাতছড়ি জাতীয় উদ্যোনে অনেক বণ্যপ্রাণী বৃদ্ধি পেয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর