× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সুন্দরবনের ছয় বনদস্যু বাহিনীর ৫৭ সদস্যের আত্মসমর্পণ

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
২৪ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার

সুন্দরবনের দস্যু বাহিনীর ৫৭ সদস্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। গতকাল বুধবার দুপুর পৌনে ১টায় র‌্যাব-৬ খুলনার সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে এ অস্ত্র ও গোলা-বারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। এরা হলো র‌্যাব-৬ এর আওতাধীন দাদা ভাই বাহিনীর ১৫ জন, হান্নান বাহিনীর নয় জন এবং আমির আলী বাহিনীর সাতজন। অপরদিকে র‌্যাব-৮ এর আওতাধীন সূর্য বাহিনীর ১০ জন, ছোট সামসু বাহিনীর নয়জন এবং মুন্না বাহিনীর সাতজন। এনিয়ে গত ২৩ মাসে মোট ২০টি বাহিনী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে ২১৭ জন সদস্য। অস্ত্র জমা দিয়েছে ৩৪৬টি ও গুলি ১৭ হাজার ৮৬৯ রাউন্ড। এ ছাড়া র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৫৭২ জন জলদস্যু গ্রেপ্তার হয়েছে। ১ হাজার ৫৪২টি অস্ত্র এবং ৩৩ হাজার ১৮৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  আসাদুজ্জামান খান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশকে জঙ্গি, মাদক ও জলদস্যু-বনদস্যু মুক্ত করতে হবে।
আর এ প্রত্যয়ে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি ইউনিট কঠোর অবস্থান নিয়ে কাজ করছে। অতি শিগগিরই সুন্দরবনকে জলদস্যু ও বনদস্যু মুক্ত ঘোষণা করা হবে। তিনি আরও বলেন, ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়ন করতে হলে যুব সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি তিন হাজারের অধিক মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এসময় পূর্বে র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণকারী সাবেক ৫৮ জন জলদস্যু ও বনদস্যুর প্রত্যেককে পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত এক লাখ টাকা করে চেক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, খুলনা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, নৌপুলিশের ডিআইজি শেখ মো. মারুফ হাসান, র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক আতিকা ইসলাম, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান এবং খুলনা জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির অন্যান্য সদস্য, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। খুলনা র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, ছয়টি দস্যুবাহিনীর মধ্যে দাদা ভাই বাহিনীর ১৫ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১২টি অস্ত্র ও ১৭৮ রাউন্ড গুলি জমা দেন। হান্নান বাহিনীর নয়জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা আটটি অস্ত্র ও ১৩০ রাউন্ড গুলি জমা দেন। আমির আলী বাহিনীর সাতজন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা পাঁচটি অস্ত্র ও ৪১ রাউন্ড গুলি জমা দেন। সূর্য বাহিনীর ১০ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১১টি অস্ত্র ও ৩৭০ রাউন্ড গুলি জমা দেন। ছোট শাসছু বাহিনীর নয়জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১০টি অস্ত্র ও ৩১০ রাউন্ড গুলি জমা দেন। মুন্না বাহিনীর সাতজন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা ১২টি অস্ত্র ও ২৫৫ রাউন্ড গুলি জমা দেন। মোট ছয়টি গ্রুপের ৫৭ জন আত্মসমর্পণ করেন। তারা অস্ত্র জমা দেন ৫৮টি এবং গুলি জমা দেন ১২৮৪ রাউন্ড।
তিনি আরো জানান, খুলনা অঞ্চলের তিন দস্যুবাহিনী সুন্দরবনের শ্যামনগর, আড়পাঙ্গাসিয়া, মংলা, আন্ধারমানিক, হারবাড়িয়া, কলাগাছি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জেলে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় করত। বনের ওপর নির্ভরশীল সাধারণ মানুষ রীতিমতো তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিল। তাদের মাসোয়ারা দিয়ে জেলে-মৌয়ালদের বনে প্রবেশ করতে হতো। এমনকি বনরক্ষীরাও তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকত। তবে সাম্প্রতিক র‌্যাবের বেশ কয়েকটি সফল অভিযানে পর দস্যুদের দৌরাত্ম্য কমতে থাকে। একই সঙ্গে সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় এসব দস্যু আত্মসমর্পণের পথ খুঁজতে শুরু করে। যার ধারাবাহিকতায় ইতিপূর্বে ২১৭ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর