চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ধান, খড় শুকানো ও মাড়াইয়ের কারণে চলাচলে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেকেই ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই মৌসুমে সড়কগুলো চাতাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ কারণে এসব সড়কে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে।
সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার রাণীরবন্দর-ঘুঘুরাতলী, বেলতলীবাজার-দেবিগঞ্জ, বিন্যাকুড়িহাট-ইছামতি ডিগ্রি কলেজ, চিরিরবন্দর-আমতলী, শান্তিরবাজার-কতুবডাঙ্গা-উচিতপুর রাস্তাসহ ছোট রাস্তাগুলোর বিভিন্নস্থানে চলছে ধান কাটা-মাড়াই ও শুকানোর কাজ। মানুষ ব্যস্ত এসব কাজে। তারা ক্ষেত থেকে ধানকেটে নিয়ে এসে সড়কেই ফেলছেন। সেখানেই যন্ত্র দিয়ে ধান মাড়াই করছেন অনেকেই। খড়গুলোও সড়কেই শুকানো হচ্ছে।
সড়ক দখল করে ধান মাড়াই ও শুকানোর ফলে যানবাহন ছাড়াও মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। সড়কগুলো সরু হয়ে পড়েছে। যেসব স্থানে এসব সড়ককে চাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সেসব স্থানে সড়কের সামান্য পরিমাণ জায়গা ফাঁকা থাকায় সেদিক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে মানুষ ও যানবাহনগুলোকে। এতে দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। অটোরিকশা চালক মতিউর রহমান, নুর আলম এবং ভ্যানচালক রশিদুল হক, শহিদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম বলেন, সড়কে ধান শুকানো ও মাড়াইয়ের কাজ চলায় তাদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। সড়কগুলো চাতাল হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় তাদেরকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অনেক সময় কৃষকসহ তাদের লোকজন হর্ন দিলেও সাইড দিতে চায় না। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। ফলে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। মোটরসাইকেল চালক ব্যবসায়ী উত্তম রায় বলেন, বর্তমান সময়ে খুব কষ্ট করে রাস্তায় চলাচল করছি। ধান-খড় ছাড়াও খুড়িয়ার বীজ রাস্তায় শুকানোয় সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে এবং এসব রাস্তায় গাড়ি পিছলে যাচ্ছে। রাস্তায় ধান শুকানো মামুদপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন ও নান্দেড়াই গ্রামের খাদেমুল ইসলাম সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানোর কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের পর্যাপ্ত আলাদা কোনো জায়গা না থাকায় এ কাজের জন্য সড়কেই বেছে নিয়েছেন। অনেকেই বকাঝকা করলেও কানে শুনতে হচ্ছে। তারা বলেন, শুধু তারাই নন। তাদের মতো অনেকেই এ কাজ করছেন। তবে, চলাচলে সমস্যা হলেও তা সাময়িক বলে মন্তব্য করেন তারা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. গোলাম রব্বানী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারেসুল ইসলাম জানান, বিষয়টি মানবিক। উপজেলার সর্বত্র একসঙ্গে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে, কৃষকরা কাঁচা-ভেজা ধান ও খড় নিয়ে সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তায় ধান ও খড় না শুকানোর জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।